বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গোটা বিশ্বে করোনা ছড়িয়ে পড়ার পচ চীন সবার নিশানায় চলে এসেছে। আরেকদিকে, চীনের আক্রমণাত্বক মনোভাবের কারণে অনেক ছোট ছোট দেশই ড্রাগনের সঙ্গে নিজেদের সম্পর্ক শেষ করছে। অনেক দেশেই চীনের থেকে হাতিয়ার এবং অন্যান্য সামগ্রীর আমদানি কমিয়ে দিয়েছে। এখন অবস্থা এতটাই শোচনীয় হয়ে গিয়েছে যে, পাকিস্তান ছাড়া আর কেউই চীনের উপর আর বরসা করতে পারছে না। সেই কারণে তাঁরা চীনের থেকে হাতিয়ার হোক আর লড়াকু বিমান কিছুই কিনছে না।
ফরেন পলিসির একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, গত মাসে ফিলিপিন্সে চীনের অতিক্রমণের পর এখন বেশীর ভাগ দেশই চীনের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করার থেকে ঘাবড়াচ্ছে। যদিও, চীনের সবথেকে প্রিয় বন্ধু পাকিস্তান বেজিংয়ের থেকে হাতিয়ার এবং অন্যান্য সামগ্রী কেনার জন্য এখনও উৎসুক। বলে দিই, গত মাসে চীনের নৌসেনার জাহাজ অনুমতি ছাড়াই ফিলিপিন্সের সীমানায় ঢুকে পড়েছিল।
রিপোর্ট অনুযায়ী, চীন লাদাখে বাস্তবিক নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারতের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়ার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক টলমল করছে। ভারত হামেশাই চীনের বদলে অন্য দেশগুলির থেকে হাতিয়ার আমদানি করে। ভিয়েতনামও ভারতের দেখানো পথেই চলে। ভিয়েতনাম আর চীনের মধ্যে সামুদ্রিক সীমানা নিয়ে সমস্যা বেড়েই চলেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, চীন এখন তাঁদের লড়াকু বিমান বিক্রি করতে চাইছে, কিন্তু মালয়েশিয়া আর ইন্দোনেশিয়াও তাঁদের থেকে কিছু কিনতে চাইছে না।
হাতিয়ার বিক্রির জন্য চীন এখন কেবলমাত্র পাকিস্তানের উপরেই নির্ভরশীল। ইসলামাবাদ বিগত পাঁচ বছরে যা হাতিয়ার আমদানি করেছে, তাঁর ৭৪ শতাংশই চীন থেকে। রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, চীনের এই অসফলতার পিছনে সবথেকে বড় কারণ হলে বেজিংয়ের বিদেশ নীতি। ফাইটার এয়ারক্রাফ্ট বিক্রি করতে সব দেশকেই তাঁদের বাণিজ্য নীতি নমনীয় করতে হয়, প্রযুক্তি হস্তান্তর করতে হয়। এগুলি সবই অস্ত্রের চুক্তির অংশ, তবে চীন এটি করে না। চীন বিশ্বের বৃহত্তম রফতানিকারক হতে চায়, তবে তাঁরা আমদানি বাড়াতে চায় না।
এই বছর স্টকহোম ইন্টারন্যাশানাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট নিজেদের একটি রিপোর্টে বলেছিল, ‘আত্মনির্ভর ভারত” মন্ত্র ভারত নিজেদের উপর নির্ভরতা বাড়াচ্ছে। ২০১১ থেকে ২০১৫ আর ২০১৬ থেকে ২০২০-র মধ্যে ভারত হাতিয়ারের আমদানি ৩৩ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে। আর এই সময়ে চীনের রফতানি ৭.৮ শতাংশ কমেছে।
ফরেন পলিসির রিপোর্ট অনুযায়ী, যদিও আপনার কেউ বন্ধুই না থাকে, তাহলে অত্যাধুনিক হাতিয়ার আর যুদ্ধ বিমানের কোনও মূল্যই থাকে না। আর এই কারণেই এখন গোটা বিশ্ব চীনের সঙ্গে সামরিক চুক্তি করার থেকে পিছু হটছে।