বাংলাহান্ট ডেস্ক: লাইমলাইটে কিভাবে থাকতে হয় তা খুব ভাল ভাবেই জানেন মুকেশ খান্না (mukesh khanna)। নানান সময় নানান বিতর্কে উঠে আসে তাঁর নাম। বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে এখন কোনো কাজ ছাড়াই যথেষ্ট পরিচিত মুখ মুকেশ। সে জন্য অবশ্য তাঁর অভিনীত দুটি চিরকালীন জনপ্রিয় চরিত্রকে কৃতিত্ব দিতেই হয়। তবে জনপ্রিয়তার সফর মোটেই সহজ ছিল না মুকেশের কাছে।
ইন্ডাস্ট্রিতে প্রথম থেকেই ‘গরিবের অমিতাভ’ তকমা পেয়ে গিয়েছিলেন মুকেশ। তিনি নাকি বিগ বিকে নকল করতেন, তাই অমন নাম। অথচ জেনে অবাক হবেন, মুকেশ কিন্তু অভিনয়ে আসতে চাননি। তাঁর ইচ্ছা ছিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। কিন্তু মাত্র কয়েক নম্বরের জন্য তাঁর ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন ফসকে যায়। এরপর ভাইয়ের কথাতেই নাটকের দলে যোগ দেন মুকেশ।
আসে তাঁর প্রথম ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত শুটিং চলাকালীনই ছবির পরিচালকের মৃত্যু হওয়ায় সে ছবি আর মুক্তির মুখ দেখেনি। কিন্তু যে ছবি মুক্তিই পায়নি সে ছবির জন্যই ইন্ডাস্ট্রিতে কটাক্ষের সম্মুখীন হন মুকেশ। আসলে ওই ছবিটির চিত্রনাট্য ও অমিতাভ বচ্চনের ‘আদালত’এর চিত্রনাট্যের কিছুটা মিল ছিল। উপরন্তু বিগ বির ব্যারিটোন গলার সঙ্গে মুকেশের কণ্ঠস্বরেরও বেশ মিল।
ব্যস, মুকেশকে ‘গরিবের অমিতাভ’ বলে দেগে দেওয়া হয়। দুঃসময় নেমে এসেছিল তাঁর জীবনে। পরপর প্রথম চারটি ছবি ফ্লপ, আর কোনো ছবির জন্যই ডাক আসত না। তবে ভাগ্য মুখ তুলে চেয়েছিল মুকেশের। বি আর চোপড়ার ‘মহাভারত’এ দুর্রোধন চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পান মুকেশ। কিন্তু তাঁর তো অর্জুন বা কর্ণ করার ইচ্ছা। শেষমেষ ভীষ্ম চরিত্রে কাস্ট করা হয় মুকেশকে। তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন অভিনেতা।
কিন্তু এর জেরে একটি সমস্যায় পড়েন মুকেশ। সব ছবিতে নায়কের বাবা বা শ্বশুরের মতো বয়স্ক চরিত্রের প্রস্তাব আসতে থাকে তাঁর কাছে। রেগেমেগে নিজের প্রযোজনা সংস্থা খোলেন মুকেশ। দূরদর্শনে নিয়ে আসেন ‘শক্তিমান’। বদলে যায় তাঁর জীবন। জনপ্রিয়তার চূড়ায় ওঠেন মুকেশ। কিন্তু দুর্ভাগ্য কোনো সময়েই পিছু ছাড়েনি তাঁর।
শোনা যেতে থাকে শক্তিমানকে নকল করতে গিয়ে বহু দূর্ঘটনা ঘটেছে। সেসব দূর্ঘটনা আদৌ কি শক্তিমানের জন্য তা জানতে মামলা করেন মুকেশ। অনেক লড়াই করেছিলেন। কিন্তু চ্যানেলের সঙ্গেই মনোমালিন্য শুরু হয় মুকেশের। বন্ধ হয়ে যায় শক্তিমান। এখন আর বলিউডে কোনো কাজই করেন না মুকেশ। তবুও বিভিন্ন বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য সংবাদ শিরোনামে উঠে আসেন তিনি। একবার মুকেশ মন্তব্য করেছিলেন, বিয়ের পর মেয়েরা যেভাবে জীবন নির্বাহ করে তা পছন্দ নয় তাঁর। সে কারণে বিয়ে করেননি তিনি। বলা বাহুল্য সে উত্তর মনে ধরেনি অনেকেরই। ‘নারী বিদ্বেষী’র তকমা দেওয়া হয়েছিল মুকেশ খান্নাকে।