বাংলা হান্ট ডেস্ক: যুদ্ধ বিধ্বস্ত আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে বাঁচতে গতকাল হুড়োহুড়ি পড়ে যায় কাবুলের হামিদ কারজ়াই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে ভাইরাল হয়েছে সেই মর্মান্তিক দৃশ্যের ছবি এবং ভিডিও।
রবিবার গোটা ভারতবর্ষ যখন স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করতে ব্যাস্ত ঠিক তখনই তালিবানরা হাতের মুঠোয় পুরে নিয়েছে গোটা আফগানিস্তান। আর তালিবানরা দখল নেওয়ার পর সেদেশের নাগরিকদের স্মৃতি উস্কে দিয়েছে ২০ বছর আগের নৃশংস তালিবানি শাসনের দৃশ্য। তাই দেশ ছাড়ার মরিয়া চেষ্টায় সবাই ছুটে আসেন বিমিনবন্দরের দিকে।
ভিড়ে ঠাসাঠাসি করে আফগানদের বিমানযাত্রার সেই দৃশ্য ছাড়াও সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এই মর্মান্তিক দৃশ্য। যা দেখে শিউরে উঠেছে গোটা বিশ্ব। ছবিতে দেখা যাচ্ছে নীল রঙের বাস্কেটে হলুদ জামা গায়ে শুয়ে রয়েছে এক সদ্যোজাত শিশু। বাবা-মা কে দেখতে না পেয়ে অনবরত কেঁদে চলেছে সে। অথচ তাঁকে কেউ তুলে নিয়ে যাচ্ছে না। একরত্তি শিশুর আর্তনাদে চোখ ভিজেছে নেটিজেনদের।
জানা গেছে ছবিটি কাবুল বিমানবন্দরের (Kabul Airport)। প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে হুড়োহুড়ি করে বিমানে ওঠার সময়েই সম্ভবত মায়ের কোল ছাড়া হয়ে গিয়েছে ওই একরত্তি শিশুটি। ওই অসহায় শিশুটিই যেন গোটা আফগানিস্তানের প্রতিকী ছবি হয়ে উঠেছে। যা ফের একবার আঙুল তুলে দিচ্ছে গোটা দেশের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ওপর ।
আফগানিস্তানের বিপন্ন শৈশবের এই দৃশ্য উস্কে মনে দিচ্ছে ছয় বছর আগের পুরনো স্মৃতি। মনে পড়ে যাচ্ছে ভূমধ্যসাগরে ভেসে ওঠা সিরিয়ান শিশু আয়লান কুর্দির (Alan Kurdi) কথা। মাত্র তিন বছরের ওই শিশুটিকেও যুদ্ধবাজদের ধ্বংসলীলায় প্রাণ বিসর্জন দিতে হয়েছিল। সিরিয়া থেকে পালিয়ে আসার সময় ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে প্রাণ হারায় সে।
এদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া বিমানবন্দরের ছবিতে দেখা যাচ্ছে দেশের মানুষ প্রাণ বাঁচাতে উঠে পড়েছেন বিমানের ছাদে। উড়ে যাওয়ার সময়ে বিমানের ছাদ থেকে পড়ে মারা গিয়েছেন দু’জন। আবার অনেকে রাজপথে চলন্ত গাড়ি ছেড়ে বিমানে ওঠার জন্য দৌড়াচ্ছেন। এছাড়াও একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে ভিড়ে ঠাসাঠাসি করে বসে রয়েছেন অসংখ্য নাগরিক। যা দেখে ট্রেনের অসংরক্ষিত কামরা বলে ভুল। কিন্তু আদতে তা বিমানবন্দরের ভিতরের ছবি।
এবিষয়ে আমেরিকার বায়ুসেনার (US military plane) বিমানের প্রতিরক্ষা বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রথমে এত সংখ্যক যাত্রী নিয়ে বিমান ওড়ানোর ইচ্ছা না থাকলেও প্রাণভয়ে আফগানরা বিমানে উঠে পড়ায় তাঁদের আর বিমান থেকে নেমে পড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়নি। জানা যায় ৬৪০ জন যাত্রী নিয়ে ওই বিমানটি কাতারের উদ্দেশে রওনা দিলেও অসংখ্য নাগরিক তখনও রয়ে গিয়েছেন বিমানবন্দরে।