“মাতাল তোমায় জানতে হবে আগামীকে মানতে হবে”, পোস্টার নিয়ে কল্যাণের বিরুদ্ধে ক্ষোভ তৃণমূলের

বাংলা হান্ট ডেস্ক: কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে ক্রমশ অসন্তোষ বাড়ছে তৃণমূলের অন্দরে। নিজের দল তো বটেই এবার দলীয় কর্মীরাও তীব্র কটাক্ষ করছেন কল্যাণকে। কল্যাণ-অভিষেকের সংঘাত প্রসঙ্গে ইতিমধ্যেই দলের একাধিক নেতৃত্ব অভিষেকের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছেন।

কিন্তু, এবার কলকাতা এবং শ্রীরামপুরের বিস্তীর্ণ অংশে কল্যাণের কুশপুতুল পোড়ালেন তৃণমূলের কর্মীরাই। অভিষেকের সাথে চলা এই ঠান্ডা লড়াইতে কল্যাণকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন তাঁরা। তাঁকে তীব্র ধিক্কার জানানোর পাশাপাশি, প্রতিবাদকারীদের প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল “মাতাল তোমায় জানতে হবে, আগামীকে মানতে হবে।”

এদিকে, এই ঘটনায় আগে থেকেই কল্যাণ এবং অভিষেক উভয় শিবিরকেই সতর্ক করেছেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। প্রকাশ্যে কাদা ছোঁড়াছুড়ি করে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট না করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, সৌগত রায় থেকে, কুণাল ঘোষ, অপরূপা পোদ্দার সহ একে একে অনেকেই প্রকাশ্যে অভিষেকের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি, কল্যাণকে কটাক্ষও করেছেন কুণাল এবং অপরূপা।

এছাড়াও, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় “শ্রীরামপুর নতুন সাংসদ চায়” বলে ফেসবুকে দাবি করেছেন। এমতাবস্থায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে শাসকদলে যে সংঘাতের পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে, তা নিয়েই এ বার সরব হলেন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ। পাশাপাশি, তিনি দাবি করেছেন যে, অভিষেক এবং কল্যাণের মধ্যে ব্যক্তিগত সমস্যা রয়েছে। এছাড়াও, কল্যাণের মতো বয়স্ক নেতাদের এখন তৃণমূলে গুরুত্ব নেই বলেও মনে করেছেন অর্জুন।

KALYAN BANERJEE 3

একটা সময়ে তিনিও ছিলেন সবুজ শিবিরে। তবে, সেই দল থেকে বিচ্ছেদ ঘটেছে অনেক আগেই। এখন রাজ্যে তিনি বিজেপির অন্যতম স্তম্ভ। তবে, বর্তমান পরিস্থিতিতে নিজের পুরোনো দলের অন্দরের কথাই স্পষ্ট করলেন অর্জুন সিংহ।

গত শুক্রবার হুগলির চন্দননগরে গিয়ে তৃণমূলের সংঘাত নিয়ে কথা বলেন তিনি। অর্জুন জানান যে, ‘‘একটা সময়ে আমি তৃণমূল করেছি। যতদূর জানি, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে একটা ব্যক্তিগত সমস্যা রয়েছে। কল্যাণরা সিনিয়র নেতা। দলে এখন তাঁরা গুরুত্ব পাচ্ছেন না। বরং যে সমস্ত তরুণ তুর্কি গরুপাচার, কয়লা পাচার নিয়ে থাকে, তাদেরই মাথায় তুলে রাখা হচ্ছে।’’

এমন পরিস্থিতিতে অর্জুনের দাবি, খুব শীঘ্রই হয়ত দল থেকে বাদ পড়তে পারেন কল্যাণ। তিনি জানিয়েছেন,‘‘দলে কল্যাণদের আর কদর নেই। উনি হতাশায় রয়েছেন। খুব শীঘ্রই হয়ত দল থেকেও বার করে দেওয়া হতে পারে তাঁকে।’’

যদিও, এমতাবস্থায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকেই জানিয়ে আসছেন যে, দলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঊর্ধ্বে তাঁর কাছে কেউ নন। পাশাপাশি, যত দিন মমতা রয়েছেন, তত দিন তিনি থাকবেন বলেও জানিয়েছেন কল্যাণ।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর