বাংলাহান্ট ডেস্ক : পুরভোটের আগে একের পর এক বিতর্কে টালমাটাল রাজ্যের ঘাসফুল শিবির। এহেন অবস্থায় সেই বিতর্কে আরও খানিক ইন্ধন জোগালো তৃণমূলের যুব নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্যের একটি ফেসবুক পোস্ট। এদিন ফেসবুকে একটি পোস্ট করে যেন দলের একাংশকে অন্য একাংশের থেকে সতর্কবার্তা দিলেন তিনি।
অত্যন্ত ইঙ্গিতপূর্ণ সেই পোস্টটিতে দেবাংশু লেখেন,’ ব্যক্তিগত স্বার্থে কিছু মানুষ ভোটে অশান্তি করেন। তাই লোকাল বডির ভোট গুলোতে অশান্তি বেশি হয়। পুলিশকে ১০০% ফ্রি হ্যান্ড দিতে হবে। প্রয়োজনে বিধানসভার দ্বিগুণ সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হোক। আরেকবার ২০১৮ হলে আরেকটা ২০১৯ কিন্তু সময়ের অপেক্ষা। বারবার সবটা ২০২১ এর মতন হবে না। আর হাতজোড় করে বাড়ি বাড়ি ঘুরলেও কিন্তু মানুষ ক্ষমা করবেন না। যাঁরা অশান্তি করেন, ভবিষ্যতে তাঁরা অনায়াসে ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সেটিং করে নিতে পারবেন। তখন মার খেতে হবে কর্মীদের, মরতে হবে সাধারণ সদস্যদের।’ তিনি আরও লেখেন, ‘কিছু স্বার্থান্বেষী বদমায়েশের জন্য দলের মুখে কালি লাগতে দেবেন না, একজন অতি সাধারণ কর্মী হিসেবে অনুরোধ রইল’।
স্বভাবতই এই পোস্টের যে প্রতিটি লাইনেই অন্তর্নিহিত অর্থ রয়েছে তা বুঝতে অসুবিধা হয় না। কিন্তু ‘ দলের যে নেতারা অশান্তি পাকান’ এবং ‘বিরোধী দলের সঙ্গে সেটিং করে নেবেন’ এহেন মন্তব্য করে ঠিক কাদের বিঁধলেন এই যুব নেতা, তা স্পষ্ট নয়। অন্যদিকে তৃণমূলের মূল ধারার বাইরে গিয়ে ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর তত্ত্বাবধানই চেয়েছেন তিনি। যাও এর আগে কখনও তাঁর মুখ থেকে শোনা যায়নি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত দেবাংশু ভট্টাচার্য। ত্রিপুরার নির্বাচনের কাজও তিনি সামলাচ্ছেন দক্ষ হাতে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কার্যতই মাতৃসমা মানেন ঘাসফুল শিবিরের এই তরুণ তুর্কি। সেই কারণেই কি তবে দলের বিপদ আসন্ন বুঝে এভাবে সতর্ক করলেন কর্মীদের? দলের অন্দরে গুঞ্জন বেনোজল ঢুকছে তৃণমূলে। সম্প্রতি শীর্ষ নেতাদের নিজেদের মধ্যে কোন্দলের ছবিও সামনে এসেছে। এহেন পরিস্থিতিতে ঠিক কাদের হাত থেকে দল এবং দলীয় কর্মীদের বাঁচাতে চাইলেন দেবাংশু? তাঁর এই পোস্টটি তবে তৃণমূলের অন্দরমহলের বড়সড় ফাটলের পূর্বাভাস, তা নিয়ে কিন্তু থেকেই যাচ্ছে একাধিক প্রশ্ন।