বাংলা হান্ট ডেস্কঃ যুদ্ধ মানেই শুধু ক্ষতি আর ক্ষতি। যুদ্ধ মানবিক থেকে অর্থনৈতিক ধ্বংস পর্যন্ত সব ধরনের সংকট নিয়ে আসে। যুদ্ধরত দেশগুলোর পাশাপাশি তাদের সঙ্গে যুক্ত দেশগুলোও ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ হলেও হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আমাদের দেশকেও ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। যুদ্ধের কারণে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১০০ ডলারে পৌঁছে গিয়েছে। এতে ভারতের এক লাখ কোটি টাকা পর্যন্ত ক্ষতি হবে।
স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (SBI) তাদের এক প্রতিবেদনে একথা জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধ চলতে থাকলে আগামী অর্থবছরে সরকারের রাজস্বে ৯৫ হাজার কোটি টাকা থেকে এক লাখ কোটি টাকার ঘাটতি দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি মূল্যস্ফীতিও বাড়বে। কারণ সব বস্তু ও পণ্যের দামে প্রভাব পড়তে পারে।
জাপানের গবেষণা সংস্থা নোমুরার দাবি, এই সংকটে এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভারত। SBI-র গ্রুপ চিফ ইকোনমিক অ্যাডভাইজার সৌম্যকান্তি ঘোষের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়ছে।
যদিও ভারতে সরকার তা নিয়ন্ত্রণে রেখেছে। যদি দাম ১০০ থেকে ১১০ ডলারের মধ্যে থাকে তবে ভ্যাট কাঠামো অনুযায়ী, পেট্রোল ও ডিজেলের দাম বর্তমান হারের চেয়ে লিটার প্রতি ৯ থেকে ১৪ টাকা বেশি হওয়া উচিত। সরকার যদি দাম বাড়ানো বন্ধ করে আবগারি ট্যাক্স বিয়োগ করে, তাহলে প্রতি মাসে ৮ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হবে।
আগামী অর্থবছরে যদি পেট্রোল ও ডিজেলের চাহিদা ৮ থেকে ১০ শতাংশ বাড়ে, তাহলে পুরো বছরে ক্ষতি এক লাখ কোটি টাকায় পৌঁছবে। এই দামগুলি মুদ্রাস্ফীতির উপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে। তেলের দাম ২০২১ সালের এপ্রিলে ব্যারেল প্রতি ৬৩.৪ ডলার থেকে বেড়ে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ৮৪.৬৭ ডলার হয়েছে। প্রায় ৩৩.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যদি এই ব্যারেল প্রতি অপরিশোধিত তেলের দাম ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়, তাহলে মুদ্রাস্ফীতি আরও বাড়বে।
এই যুদ্ধের সঙ্গে ভারতের কৌশলগত স্বার্থ জড়িত না থাকলেও অর্থনৈতিক প্রভাব পড়বেই। ইউরোপে দেওয়া পরিষেবাগুলি নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত হবে। রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা ভারত থেকে রপ্তানি হওয়া চা এবং অন্যান্য নিয়মিত পণ্যের উপরও প্রভাব ফেলতে পারে।
সোনা, প্ল্যাটিনাম ও প্যালাডিয়ামের মতো মূল্যবান ধাতুর দাম বাড়বে। ইউক্রেন কৃষি পণ্যের একটি প্রধান রপ্তানিকারক। আমদানি বন্ধ হলে গম, ভুট্টার মতো খাদ্যশস্যের দাম বাড়তে পারে। জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ৬.০১ শতাংশে ছিল, যা ৭ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।