বাংলাহান্ট ডেস্ক : আবারও নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনায় শিরোনামে মালদহ। মেলা থেকে ফেরার পথে তুলে নিয়ে গিয়ে নৃশংস ভাবে গণধর্ষণ ১৩ বছরের কিশোরীকে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের হরিশচন্দ্রপুর থানা এলাকার রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের শালদহ এলাকায়। এখনও অবধি ২ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হলেও পলাতক ৩ জন।
জানা যাচ্ছে হরিশচন্দ্রপুর থানার শালদহ গ্রামে উরুষের মেলা চলছে। নিজের পরিবারের সঙ্গে সেই মেলাতেই ঘুরতে যায় বছর ১৩ এর মেয়েটি। হঠাৎ রাত ১২ টা নাগাদ প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে মেলার পাশে একটি ফাঁকে মাঠে যায় সে। সেই সময় একাই ছিল নাবালিকা। অভিযোগ ওই মাঠ থেকেই মুখ চেপে ধরে তাকে তুলে নিয়ে যায় ৫ অভিযুক্ত। তারপর তাকে মোটর সাইকেলে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় কয়েক কিলোমিটার দূরের চণ্ডীপুর হাই স্কুলের পিছনে একটি পরিত্যক্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ছাদে। সেখানে ৫ জন মিলে বীভৎস ভাবে লাগাতার চলে ধর্ষণ। এই অত্যাচারে জ্ঞান হারায় মেয়েটি। তখন তাকে সেখানে ফেলে রেখেই চলে যায় ধর্ষকরা।
খবর পেয়ে তড়িঘড়ি তাকে উদ্ধার করে বাড়ির লোকজন। স্থানীয় একটি হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন সে। এলাকারই একটি মাদ্রাসায় মেয়েটি অষ্টম শ্রেণীতে পড়ত বলেই জানা গিয়েছে। ঘটনার পর হরিশচন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতার মা। এখনও অবধি ২ জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। বাকি ৩ অভিযুক্ত এখনও পলাতক। ঘটনার জেরে প্রবল উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়।
একের পর সন্ত্রাস এবং ধর্ষণের ঘটনায় নাম জড়াচ্ছে মালদহ জেলার। সপ্তাহখানেক আগেই আর এক নাবালিকাকে ধর্ষণের ঘটনা সামনে আসে মালদহতে। রীতিমতো ঘরে ঢুকে হাত পা বেঁধে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে ধর্ষণ করা হয় নাবালিকাকে। এই বছরই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে নির্যাতিতা কিশোরী। সংসারে চরম টানাটানি থাকলেও মেয়ের পড়াশোনা বন্ধ করেননি দিনমজুর বাবা। সোমবার ঘটনার সময় কাজে বেরিয়েছিলেন তিনি। বাড়িতে ছিলেন না নির্যাতিতার মা ও। ওই সময় ফাঁকা বাড়িতে একটি বিছানায় শুয়ে ছিল কিশোরী। আর সেই সুযোগ নিয়েই ঘরে ঢুকে পড়ে অভিযুক্ত। কোনও মতেই দরজা খুলতে চায়নি কিশোরী। শেষ মেষ দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে পড়ে রায়হান। তারই গায়ের ওড়না দিয়ে হাত পা বেঁধে তারপর কপালে বন্দুক ঠেকিয়ে পাশবিক অত্যাচার চালানো হয় ছোট্ট মেয়েটির উপর। তার আর্ত চিৎকার শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। কিন্তু ততক্ষনে যা হবার তা হয়ে গিয়েছে। রক্তে ভেসে যাচ্ছে বিছানা। বিছানায় পড়ে কাতরাচ্ছে কিশোরী। এরপরই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে। ঘটনায় অভিযুক্ত এক তৃণমূল কর্মী এবং দুই সিভিক ভলেন্টিয়ারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
একের পর এক ধর্ষণ কাণ্ড রাজ্যজুড়ে। পাশবিক, নারকীয়, জঘন্য, ঘৃণ্য যে বিশেষনেই বিশেষিত করা হোক, কম পড়ে যায় যেন সবকিছুই। এই ঘটনায় স্পষ্টতই আরও একবার সামনে উঠে এল রাজ্যে নারী নিরাপত্তার আসল ছবি। যেখানে মেলার পাশ থেকে এভাবে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয় নাবালিকাকে, সেখানে ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে বাংলার নারী নিরাপত্তা? উঠছে প্রশ্ন।