বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সম্প্রতি, নদীয়ার হাঁসখালি ধর্ষণ কাণ্ডে একের পর এক নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হচ্ছে আর প্রতিদিনই একাধিক নতুন তথ্য উঠে এসেছে সকলের সামনে। বর্তমানে মামলার তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয় হাইকোর্ট আর তারপর থেকেই উঠে আসে একাধিক অজানা তথ্য। এবার হাঁসখালি কাণ্ডে মৃতার বাবা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বললেন, তাঁরা যখন মৃতদেহ নিয়ে বসেছিলেন, তখন তাদের বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে ও ভয় দেখিয়ে মৃতদেহ তুলে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা এবং পরে তা পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
এরপর তিনি বলেন, “আমাদেরকে এতদিন পর্যন্ত ভয় দেখিয়ে রেখেছিল অভিযুক্ত ব্যক্তি ও তাঁর দলবল। তাই আমরা এতদিন চুপ ছিলাম। কিন্তু বর্তমানে সিবিআই তদন্তভার হাতে নেওয়ায় আমাদের মনে সাহস এসেছে। আমরা অভিযুক্তদের শাস্তি দাবি করছি।”
এখানে অবশ্য পূর্বে করা পুলিশের দাবি ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে। দুইদিন পূর্বে পুলিশ সূত্রে বলা হয়, নির্যাতিতার বাবা তাদের জানিয়েছিল যে তিনি তাঁর পরিবার এবং প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিয়ে গিয়ে তাঁর মেয়ের দেহ পুড়িয়ে দেয়। স্থানীয় সূত্রের দাবি অনুযায়ী, সেদিন তাঁর পরিবার এবং প্রতিবেশীসহ 19 জন শ্মশানে ছিলেন। এবং সকাল সাড়ে সাতটার সময় কিশোরীর মুখাগ্নি করা হয়। ফলে বর্তমানে নির্যাতিতার বাবার নতুন এই দাবি ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
হাঁসখালি কাণ্ডে সত্য উদঘাটন করে নির্যাতিতার বাবা বলেন, “গত 4 ঠা এপ্রিল সমর গোয়ালার ছেলের আমন্ত্রণে আমার মেয়ে তার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যায়। সন্ধ্যা 7:30-এ তারা আমার মেয়েকে বাড়ি ছেড়ে দিয়ে যায়। আমি তখন বাড়িতে ছিলাম না কিন্তু আমার স্ত্রী পরে আমাকে জানায় যে, একজন মহিলা এবং দুইজন পুরুষ আমার মেয়েকে ছেড়ে দিতে এসেছিলেন। আমরা তাদের চিনতাম না।” এরপর তিনি বলেন, “পার্টি থেকে ফিরে আসার পর ওর রক্তক্ষরণ শুরু হয়। পরের দিন সকালে অবস্থার অবনতি হলে, আমরা ডাক্তারের খোঁজে বের হই। এরপর আমরা ফিরে এসে দেখি সে মারা গেছে।” এরপর তিনি অভিযোগ করেন যে, “আমার মেয়ে এবং সেই ছেলের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ওকে ধর্ষণ করেছে সমর গোয়ালার ছেলেই।”
গতকাল আবার একটি অডিও ক্লিপ নিয়ে হইচই শুরু হয়। হাঁসখালি কাণ্ডে ভাইরাল সেই অডিও ক্লিপে একজনকে বলতে শোনা যায়, রাত সাড়ে আটটার সময় মেয়েটিকে নিয়ে যান দীপঙ্কর। প্রায় একঘন্টা মেয়েটির সঙ্গে ছিল সে। তার সঙ্গে আরো একজন ছিল বলে এখানে দাবি করা হয়। পরে মেয়েটির মা তাকে নিয়ে যায়। এই গ্রুপ কলে এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, দীপঙ্কর পোদ্দার রাত সাড়ে আটটার সময় মেয়েটিকে তার সঙ্গে নিয়ে যায়। এখন দীপঙ্করের জন্য তারা সবাই আতঙ্কে রয়েছে।
এছাড়া সেই অডিও ক্লিপে এরপর শোনা যায়, “দীপঙ্কর সেদিন রাতে গিয়েছিল। এবার কথাটা শোন। ও কাউকে বলেনি। এবার আমাকে বলছে, ‘আমি ওখানে ছিলাম.. তাড়াতাড়ি বেরিয়ে গিয়েছি। কিন্তু কেউ জানে না।’ তারপর ও আর ওর ভেতরে যায় নি। এবার যখন পুলিশ এসেছে, তখন ও ভয় পেয়েছে। আর কথা বের হচ্ছে না। কারণ ও এখন ঘাবড়ে গেছে। ওর জন্যই ব্রজগোপাল ফেঁসেছে।” ফলে, বর্তমানে একাধিক নতুন তথ্য মাঝে শেষপর্যন্ত দোষীদের শাস্তি হয় কিনা, সেদিকে তাকিয়ে সকলে।