বাংলা হান্ট ডেস্কঃ হাঁসখালি নাবালিকা ধর্ষণ ও মৃত্যু কাণ্ড নিয়ে রহস্য দিনের পর দিন আরো ঘনীভূত হয়ে চলেছে। ঘটনাটি সামনে আসার পর পুলিশ প্রশাসনের গাফিলতি, মুখ্যমন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্য এবং পরে উচ্চ আদালতের দ্বারা পুলিশের হাত থেকে তদন্তভার সিবিআই-এর হাতে তুলে দেওয়ার মধ্যে দিয়ে প্রতিটি পদে পদে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। হাঁসখালি কাণ্ডের প্রথম থেকেই যেমন বিরোধী দল থেকে বিশেষজ্ঞদের একাংশ মুখ্যমন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্যের সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠে, ঠিক তেমনি ভাবে এই ঘটনায় শাসকদলের জড়িত থাকার অভিযোগও উঠতে থাকে বিভিন্ন মহল থেকে।
শেষ পর্যন্ত অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার ছেলে ব্রজগোপাল গোয়ালাকে পুলিশ গ্রেফতার করলে সেই বিতর্ক আরো বৃদ্ধি পায়। এরপর এলাকাবাসীরা জানায় যে, তৃণমূলের স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সমর গোয়ালার দাপাদাপিতে প্রায় সকলেই ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে থাকতেন। এমনকি, এলাকার বুকে পুত্র ব্রজগোপালের দাদাগিরির পেছনেও ছিল বাবার মদত। এ সকল অভিযোগ এবং ছেলের গ্রেফতারের মাঝেই সমর গোয়লার খোঁজ লাগাতে সক্ষম হয়নি পুলিশ প্রশাসন। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিরোধী দলগুলি অভিযোগ করতে থাকে যে, পরিস্থিতি জটিল দেখে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে ওই তৃণমূল নেতা। কিন্তু বর্তমানে হাইকোর্টের দ্বারা সিবিআইকে তদন্তভার তুলে দেওয়ার পরেই সামনে আসে একাধিক নতুন তথ্য। আর ঠিক এর মাঝেই এদিন সকলের সামনে এসে উপস্থিত হলেন তৃণমূল নেতা সমর গোয়ালা।
সংবাদমাধ্যমের কাছে এদিন সমর গোয়লা বলেন, “এলাকায় যে সকল ঘটনা ঘটেছে, তার সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই। কিন্তু যারা ক্রমশ বলে চলেছে যে, ঘটনার সময় আমি এলাকায় ছিলাম এবং পরে লোক পাঠিয়ে নির্যাতিতা পরিবারকে ভয় দেখিয়ে চলেছি, তারা মিথ্যে বলছে। তাদের উচিত প্রথমে এই ঘটনার প্রমাণ দেওয়া।” এছাড়াও তিনি বলেন, “আমি আমার ছেলের জন্য একদমই ভাবনা চিন্তা করছিনা, যদি অন্যায় করে তবে নিশ্চয়ই শাস্তি পাবে। কিন্তু গ্রামবাসীরা যেভাবে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে চলেছে, তাতে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। এলাকাবাসীদের জন্য আমি একাধিক ভালো কাজ করেছি, কিন্তু তারাই বর্তমানে আমার বিরুদ্ধে কথা বলে চলেছে।”
স্বভাবতই এদিন বিধ্বস্ত দেখায় তৃণমূল নেতাকে। তবে এলাকাবাসীদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করলেও সিবিআই তদন্তকে তিনি এদিন স্বাগত জানান। তিনি বলেন, “বর্তমান সিবিআই তদন্তভার নিয়েছে। ফলে তারা যখনই আমাকে ডাকবে, তখনই আমি সেখানে গিয়ে উপস্থিত হব।”