জীবন বাজি রেখে জ্বলন্ত বাড়ির তিনতলা থেকে উদ্ধার বৃদ্ধা, কলকাতা পুলিশের ভূয়সী প্রশংসা

বাংলা হান্ট ডেস্ক: তাঁরা সমাজের রক্ষক! পাশাপাশি যে কোনো রকম বিপদেই তাঁরা দেবদূতের মত উপস্থিত হয়ে বাড়িয়ে দেন সাহায্যের হাত। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাঁরা কার্যত বাজি রেখে দেন নিজেদের প্রাণই। সম্প্রতি ঠিক সেইরকমই এক ঘটনার সাক্ষী থাকল মহানগরী। পাশাপাশি, কলকাতা পুলিশের কর্তব্যরত এক পুলিশকর্মী তৈরি করলেন বীরত্বের এক নয়া নজির। শুধু তাই নয়, তিনি বাঁচিয়েছেন এক বৃদ্ধার প্রাণও। আর তারপরেই তাঁর জয়জয়কার পড়েছে চারিদিকে।

এমনকি, কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পেজেও পোস্ট করা হয়েছে এই অনবদ্য ঘটনাটি। নিজের জীবন বিপন্ন করেই আগুন লেগে যাওয়া বাড়ি থেকে চলাচলে অক্ষম এক বৃদ্ধাকে পিঠে করে উদ্ধার করে তিনি আজ সকলের কাছে হয়ে উঠেছেন “নায়ক”।

   

ঠিক কি ঘটেছে?
জানা গিয়েছে যে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ শ্যামবাজার পাঁচমাথা মোড়ের অনতিদূরে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রোডের ওপর এক তিনতলা বাড়িতে হঠাৎই আগুন লেগে যায়। প্রাথমিকভাবে জানা যায় যে, বাড়িটির একতলায় সিঁড়ি সংলগ্ন একটি দোকানের রান্নাঘরে থাকা গ্যাস সিলিন্ডার থেকেই এই আগুন লাগে।

এমতাবস্থায়, আগুন লাগার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে যান শ্যামপুকুর থানার অ্যাডিশনাল ওসি এবং শ্যামবাজার ট্রাফিক গার্ডের ওসি প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জি। সেখানে পৌঁছে তাঁরা দেখতে পান যে, সম্পূর্ণ আগুনের গ্রাসে চলে গিয়েছে ওই বাড়িটির একতলার রান্নাঘর। পাশাপাশি, তাঁরা জানতে পারেন যে, বাড়িটির তিনতলায় একা থাকেন ৯৩ বছর বয়সী বৃদ্ধা কল্পনা ধর।

এমনকি, হাঁটাচলা করতে পারেন না ওই বৃদ্ধা। যে কারণে নিজে থেকে তিনি সিঁড়ি দিয়ে নেমেও আসতে পারছিলেন না। এমতাবস্থায়, আগুনের প্রভাব ক্রমশ বাড়তে থাকায় তৎক্ষণাৎ উপরে গিয়ে বৃদ্ধাকে বাঁচানোর সিদ্ধান্ত নেন প্রসেনজিৎ। সিঁড়ি দিয়ে সোজা তিনতলায় উঠে কল্পনা দেবীকে নিজের পিঠে চাপিয়ে নিচে নেমে আসেন তিনি।

এই কাজে তাঁকে সাহায্য করেন কনস্টেবল শ্যামল সিং সর্দার। যদিও, এরপরেও ক্ষান্ত থাকেননি তিনি। বরং, আগুন লাগা ওই রান্নাঘরে ঢুকে যে সিলিন্ডার থেকে আগুন লাগে, সেটি বাইরে বের করেও নিয়ে আসেন প্রসেনজিৎ। ঠিক তারপরেই দমকলের চেষ্টায় ওই বাড়ির আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়। এদিকে, পুরো ঘটনায় প্রসেনজিতের তৎপরতায় আহত হননি কেউই।

এদিকে, ওই পুলিশকর্মীর এহেন সাহসী পদক্ষেপে অবাক হয়ে যান সেখানে উপস্থিত সকলেই। পাশাপাশি তিনি যেভাবে ওই বৃদ্ধাকে আগুনের করাল গ্রাস থেকে বাঁচিয়ে আনলেন সেই কারণে একবাক্যে সকলেই কুর্ণিশ জানিয়েছেন তাঁকে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর