বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সম্প্রতি বহরমপুর কলেজের পড়ুয়া সুতপা চৌধুরীকে মেসের বাইরে খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। এই ঘটনায় অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরীকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার পর থেকেই একের পর এক চমকপ্রদ তথ্য উঠে আসছে পুলিশের সামনে যা তাদেরকেও হতবাক করে তুলেছে। এবার তাদের হাতে এলো সুতপাকে লেখা সুশান্ত চৌধুরীর শেষ হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট।
তদন্তকারী সূত্রের খবর, সুতপাকে শেষ হোয়াটসঅ্যাপে সুশান্ত লিখেছিল, “আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। অনেক সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখেছিলাম কিন্তু তুই আমার জীবন নষ্ট করে দিয়েছিস। আমার মতো অনেকের জীবন নষ্ট করেছিস তুই। এইভাবে যদি চলতে থাকে, তাহলে তোর ভয়ংকর পরিণতি হবে।” আর ঠিক এর কিছু সময়ের মধ্যেই বহরমপুরে মেসের বাইরে সুতপাকে ছুরির একাধিক কোপে খুন করে অভিযুক্ত।
সূত্রের খবর, সুশান্ত বহুদিন ধরেই হোয়াটসঅ্যাপ সহ ফেসবুকে একের পর এক হুমকির পোস্ট করতে থাকে। সুতপার পরিবারের ঘনিষ্ঠ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তরুণী দাবি করেছে, “সুতপা সুশান্তর দ্বারা পাঠানো মেসেজগুলি পড়েছিল এবং সেটি আমাকেও জানায়। এরপর ও, ওর বাবা মাকে পুলিশের কাছে অভিযোগও করতে বলে।” এই প্রসঙ্গে মৃতার বাবা জানিয়েছেন, “সুশান্তর বিরক্তির হাত থেকে বাঁচার জন্য আমার মেয়ে একাধিকবার ফোনের সিম বদল করে। এমনকি সুশান্তকে ব্লকও করে দেয়। কিন্তু তা সত্বেও সুতপার এক বন্ধুর মাধ্যমে প্রতিবারই নতুন নম্বর সম্পর্কে খোঁজ পেয়ে যেত অভিযুক্ত।”
তবে এ সকল অভিযোগ মানতে নারাজ সুশান্তের পরিবারের লোক জনেরা। সুশান্তের পিসি জানান যে, “আমার ভাইপো সুতপার সঙ্গে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে এসেছিল। কিন্তু সুতপাই ওকে মাঝে মধ্যে উস্কানি দিত, এমন কি বারবার দেখা করতেও বলত।” এছাড়া সুশান্তের এক বন্ধু জানায়, “সুতপাই প্রথম প্রেমের প্রস্তাব দেয় সুশান্তকে। প্রথমে সুশান্ত এই ব্যাপারটি নিয়ে মাথা না ঘামালেও পরে তার প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়। ছোট থেকেই ও বাবাকে প্রচন্ড ভয় পেত, কিন্তু একপ্রকার জোর করেই ও সুতপার সঙ্গে সম্পর্কে যায়। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে মেয়েটির মা এই সম্পর্কের সম্বন্ধে জেনে গেলে ওর বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়ে আসে।”
তদন্তকারীদের মতে, সম্প্রতি সুতপার সঙ্গে জঙ্গিপুর কলেজের এক তরুণের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে আর সেই কথা সুশান্ত জানতে পেরে যায়। ঘটনার দিন সেই কলেজ পড়ুয়ার সঙ্গেই সিনেমা দেখতে যায় সুতপা আর সেই ঘটনা জানতে পেরেই সম্ভবত প্রাক্তন প্রেমিকাকে খুন করার পরিকল্পনা নেয় অভিযুক্ত।