অ্যাথলিট হতে চেয়ে বসেছিলেন অনশনে, এবার বিশ্বকাপে যাওয়ার টিকিট পেলেন ধন্যি মেয়ে

বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের রূপল চৌধুরী নামটা আজ দেশের অনেক ক্রীড়াপ্রেমীর কাছেই খুব পরিচিত। ১৭ বছর বয়সী এই উত্তরপ্রদেশের প্রতিভাবান তরুণী অ্যাথলিট সম্প্রতি গুজরাটের নাদিয়াদে অনুষ্ঠিত জাতীয় অনূর্ধ্ব-২০ ফেডারেশন কাপ অ্যাথলেস্টিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ৪০০ মিটার দৌড় ইভেন্টে স্বর্ণপদক জিতেছে সকলের নজরে এসেছেন। সেই সঙ্গে আগস্ট ২০২২-এ আমেরিকার মাটিতে অনুষ্ঠিত হতে চলা বিশ্ব অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের জন্যও যোগ্যতা অর্জন করেছেন তিনি। তবে এইজন্য নয়, উত্তরপ্রদেশের এই অ্যাথলিটের সকলের নজর কেড়েছেন আজ তার এই জায়গায় পৌঁছনোর সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে।

জৈনপুর গ্রামের নাম আপনারা সম্ভবত শোনেননি। পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের মিরাঠের থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই গ্রামের মেয়েদের সঙ্গে অ্যাথলেটিক্সের কোনও সম্পর্কই ছিল না। রূপালের বাবা ওমভীর একজন আখ চাষি এবং পুরোনো ধ্যান ধারণা সম্পন্ন মানুষ। এই গ্রাম থেকেই বড় হয়ে ওঠা রুপাল ২০১৬ সালে অ্যাথলেটিক্সকে তার কেরিয়ার হিসাবে বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। জাতীয় ফেডারেশন কাপে প্রিয়া মোহনের মতো তারকা খেলোয়াড়কে হারিয়ে বেশ শিরোনাম করেছিলেন রুপাল।

রূপল চৌধুরী সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আমি পিভি সিন্ধু এবং সাক্ষী মালিকদের রিও অলিম্পিক থেকে পদক আনতে দেখেছি। তাদের সাফল্য আমাকে অ্যাথলেট হওয়ার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল কিন্তু আমি জানতাম না এর জন্য আমাকে কী করতে হবে, তবে আমি এই লক্ষ্যে পৌঁছতে গিয়ে কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছি।আমাদের মিরাটে অ্যাথলেটিক্সকে কেন্দ্র করে একটি মাত্র স্টেডিয়াম বর্তমান। কিন্তু আমার বাবা তখন আমাকে সেখানে যেতে দিতে রাজি ছিলেন না, কারণ আমি একজন মেয়ে।

রুপাল আরও বলেন, ‘ একদম শুরুতে উনি আমাকে স্টেডিয়ামে নিয়ে যেতে রাজি হন। কিন্তু তারপর থেকে একের পর এক অজুহাত দেখিয়ে আমার বিষয়টি এড়িয়ে যেতে থাকে বাবা। বাবা সম্ভবত মনে করেছিলেন যে আমি আমার জেদ ছেড়ে দেব। এক বছর ধরে কাকুতি মিনতি করে মনে হলো যে বাবা আমাকে কখনোই আর স্টেডিয়ামে পাঠাবেন না। তাই আমি ২০১৭-তে অনশনে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিন দিন কেটে যাওয়ার পর বাবা বুঝতে পেরেছিল ঘটনার গুরুত্ব। তাই শেষপর্যন্ত বাধ্য হয়েই তিনি আমার জেদ মেনে নেন। নয়তো আমার আজ এখানে পৌঁছনো হতো না।”

Reetabrata Deb

সম্পর্কিত খবর