বাংলাহান্ট ডেস্ক: ‘আমি অরুণ চট্টোপাধ্যায়, আমি ইন্ডাস্ট্রি’। ‘অটোগ্রাফ’ ছবিতে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের (Prosenjit Chatterjee) এই সংলাপটা এখনো একই রকম জনপ্রিয় হয়ে রয়েছে। আর ওই ছবির ওই সংলাপটার পর থেকেই নতুন তকমা জুড়েছে বুম্বাদার নামের সঙ্গে, ‘ইন্ডাস্ট্রি’।
টলিউড ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম স্তম্ভ তিনি, তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু নিজেকে ‘ইন্ডাস্ট্রি’ বলতে রাজি নন খোদ প্রসেনজিৎ। একা একজন মানুষ কি কখনো ইন্ডাস্ট্রি হতে পারে? প্রশ্ন অভিনেতার। তার থেকে বরং নিজেকে টলিউডের ‘সিইও’ বলতে বেশি পছন্দ করেন প্রসেনজিৎ।
অনেক কম বয়সে শিশুশিল্পী হিসাবে অভিনয়ে হাতেখড়ি হয়েছিল প্রসেনজিতের। সে সময়ে ইন্ডাট্রি বলতে বোঝাত সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়, রঞ্জিত মল্লিকদের। তাঁদের হাত থেকে ব্যাটন তুলে নেন প্রসেনজিৎ, চিরঞ্জিত, তাপস পালরা। তাঁদের হাত ধরে নতুন রূপ পেয়েছিল টলিউড।
আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে প্রসেনজিৎ বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর দায়িত্ব বেড়েছে ইন্ডাস্ট্রির প্রতি। শুধু অভিনেতা এখন আর নন তিনি। অনেক গুণ দায়িত্ব তাঁর। সিইওর মতোই কাজকর্ম, দায়িত্ব পালন করতে হয় তাঁকে। তাই নিজেই নিজেকে টলিউডের সিইওর খেতাব দিয়েছেন প্রসেনজিৎ।
হ্যাঁ, টলিউডকে একটা সংস্থা বলেই মনে করেন প্রসেনজিৎ। এই সংস্থায় অনেকে মিলে একসঙ্গে কাজ করেন, যারা সকলেই গুরুত্বপূর্ণ। যে কলাকুশলীরা আলোর কাজ করেন, সেট বানান তারাও যেমন গুরুত্বপূর্ণ, অভিনেতা অভিনেত্রী পরিচালক প্রযোজকদেরও ততটাই গুরুত্ব বলে মত প্রসেনজিতের।
দীর্ঘ অভিনয় কেরিয়ারে ইন্ডাস্ট্রিকে চোখের সামনে বদলাতে দেখেছেন প্রসেনজিৎ। উন্নতি দেখেছেন ইন্ডাস্ট্রির। তাঁর হাত ধরেই সিনেমাস্কোপ এসেছে টলিপাড়ায়। আবার প্রসেনজিৎ অভিনীত অটোগ্রাফই টলিউডের প্রথম ডিজিটাল ছবি।
যারা আজকের ঝাঁ চকচকে ‘অভিনেতা’ প্রসেনজিৎকে চেনেন তাদের নিজে দায়িত্ব নিয়ে ‘নায়ক’ প্রসেনজিৎকেও চেনালেন বুম্বাদা। একটা সময় গিয়েছে যখন একটানা কাজ করতে করতে বাড়ি যাওয়ার সময় পেতেন না তিনি। ভ্যানিটি ভ্যান কী বস্তু তা জানতেন না অনেকেই। এমনকি গ্রিন রুমেও ছিল না এসি।
বিরতি পেলে গাড়ির ছাদে ঘুমাতেন প্রসেনজিৎ। খাওয়া বলতে প্লেটে দই শসা কিংবা একটু তরকারি। বছরের পর বছর এই অত্যাচার শরীর কি আর সইবে? অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন প্রসেনজিৎও। ঝড় জল রোদ সয়ে তবেই ‘ইন্ডাস্ট্রি’ হয়েছেন তিনি।