বাংলা হান্ট ডেস্কঃ অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে জেরায় একের পর এক নতুন তথ্য এসে চলেছে সিবিআইয়ের হাতে। বর্তমানে সায়গলের বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির উৎসের খোঁজ করে চলেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তবে শুধু তাই নয়, সায়গল ও তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ পুলিশ কর্মী এবং অন্যান্য একাধিক ব্যবসায়ীদের বেআইনি সম্পত্তির দিকেও নজর রেখে চলেছে সিবিআই।
সম্প্রতি জিজ্ঞাসাবাদের পরে অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে হেফাজতে নেয় সিবিআই। পরবর্তীকালে আদালত দ্বারা পুনরায় তাকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। হেফাজতে থাকাকালীন জেরার মুখে একের পর এক নতুন তথ্য আসে গোয়েন্দা সংস্থার হাতে। এর মাঝেই সায়গলের বিপুল পরিমাণ বেআইনি অর্থের হদিস পায় তারা।
সিবিআইয়ের দাবি অনুযায়ী, অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষীর কাছে বর্তমানে পঞ্চাশটি বাড়ির দলিল রয়েছে। এক্ষেত্রে রাজারহাট, সল্টলেক, মুর্শিদাবাদ এবং লেকটাউনের মতো জায়গায় তার সম্পত্তি থাকার পাশাপাশি পাঁচটি crasher মেশিন, দশটি ডাম্পার এবং এছাড়া দু’কোটি টাকা রয়েছে। মুর্শিদাবাদেই সায়গলের মোট 60 টি সম্পত্তির খোঁজ মিলেছে। সব মিলিয়ে সকল সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় 150 কোটি। ফলে এই বিপুল পরিমাণ অর্থের খোঁজ লাগিয়ে চলেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। অবশ্য জেরায় আরও একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে এবং সেই সূত্র ধরেই বর্তমানে বীরভূম জেলার বিভিন্ন থানায় সায়গলের ঘনিষ্ঠ পুলিশকর্মীদের সম্পত্তির দিকেও নজর রয়েছে সিবিআইয়ের। এছাড়াও মিলেছে একাধিক ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীর নাম, যাদের নামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সম্পত্তি। বীরভূম ছাড়াও মুর্শিদাবাদে সেই সকল ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে বর্তমানে খোঁজ লাগিয়ে চলেছে সিবিআই অফিসাররা।
এই প্রসঙ্গে সিবিআইয়ের দাবি, “সায়গল হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে শাসক দলের প্রভাবশালী নেতার ঘনিষ্ঠ বহু পুলিশ কর্মী এবং ব্যবসায়ীদের নাম পাওয়া গিয়েছে, যাদের নামে প্রচুর বেআইনি সম্পত্তি রয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে ক্রমশ তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছি।”
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন পূর্বে একটি গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে সায়গল হোসেন। এক্ষেত্রে সেই গাড়ি দুর্ঘটনায় তার বাচ্চা মেয়ে এবং বন্ধু মাধব কৈবর্তর মৃত্যু হয়। বোলপুরের বাসিন্দা সেই মাধবের বিরুদ্ধে বর্তমানে একাধিক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ এসেছে সামনে। জানা গিয়েছে, অতিরিক্ত অর্থের মালিক না হলেও মাধবের নামে পেট্রোল পাম্প পর্যন্ত রয়েছে এলাকায়। এছাড়া অন্যান্য একাধিক ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের নামে জমি সহ অন্যান্য সম্পত্তি রয়েছে বলে দাবি সিবিআইয়ের। এক্ষেত্রে সে সকল জিনিসই যে সায়গল হোসেনের টাকা দিয়েই কেনা হয়েছিল, সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে গোয়েন্দা সংস্থা।
সায়গলের ঘনিষ্ঠ সেই সকল ব্যক্তিদের পাকড়াও করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরো একাধিক নতুন তথ্য যে উঠে আসতে পারে, সে বিষয়ে মত সিবিআইয়ের। স্বাভাবিকভাবেই এই দুর্নীতির জাল যে বহুদূর বিস্তৃত রয়েছে এবং খুব দ্রুত তা গুটিয়ে আনতে চলেছে সিবিআই, সে বিষয়ে মতপ্রকাশ করেছে বিশেষজ্ঞরা।