ভাইয়ের মৃতদেহ কোলে নিয়ে মাছি তাড়াচ্ছে একরত্তি, মর্মস্পর্শী ভিডিও কাঁদিয়ে ফেলবে ..

বাংলাহান্ট ডেস্ক : এক ঝলক দেখে আপনার মনে হবে কোনও চলচিত্রের শুটিং চলছে বোধহয়। সাদা কাপড়ে জড়িয়ে কিছু একটা একটা জিনিস বুকের কাছে আঁকড়ে ধরে রেখেছে একটি ছোট্ট ছেলে । কতগুলো মাছি এসে ঘিরে ধরেছে তাকে। হাত দিয়ে সেই মাছি তাড়াচ্ছে সে, কখনও উদ্দেশ্যহীন ভাবে তাকাচ্ছে এদিক ওদিক। অথবা কাউকে হয়তো খুঁজছে ও। তারপরই আপনার নজরে পড়বে একটি ছোট্ট হাতটি বেরিয়ে রয়েছে সাদা কাপড়ের তলা দিয়ে।

তখনই আপনি বুঝতে পারবেন বাচ্চাটির কোলের সাদা কাপড়ের তলায় রয়েছে ছোট্ট আর এক শিশুর প্রাণহীন দেহ (Baby body)। নিথর নিঃস্পন্দ! কিন্তু না, এটা কোনও সিনেমার শুটিং তো নয়ই, বদলে প্রকট বাস্তব। ঘটনাটি মধ্যপ্রদেশের (MadhyaPradesh) মোরেনা শহরের। মর্মস্পর্শী এই দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই শিউরে উঠেছেন সকলে। ওই ছবির নিচে লেখা, দু’বছরের শিশু ভাইয়ের মৃতদেহ কোলে নিয়ে বসে রয়েছে বছর আষ্টেকের দাদা।

ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োটিতে দেখা যাচ্ছে, বাচ্চাটিকে ওভাবে বসে থাকতে দেখে তাকে প্রশ্ন করছেন এলাকার মানুষ। শিশুটি জানায়, তার নাম গুলশন। আট বছর বয়স তার। দু’বছরের মৃত ভাইয়ের নাম রাজা।একটু আগেই হাসপাতালে মারা গেছে ভাই। তার বাবা গাড়ির খোঁজ করতে গেছেন অন্যদিকে। তাই ভাইকে নিথর দেহকে এভাবেই রক্ষা করছে সে। মাছি তাড়াচ্ছে ভাইয়ের প্রাণহীন দেহ থেকে।

সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, অম্বার বদফ্রা গ্রামে অসুস্থ হয়ে পড়ে ওই ছোট্ট শিশু। সেখানে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়নি। তাই একটি অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করে, অসুস্থ ছোট্ট সন্তানকে কোলে নিয়ে ৩০ কিলোমিটার দূরের গ্রাম থেকে মোরেনা জেলা হাসপাতালে এসেছিলেন বাবা পুজরাম জাটভ। সঙ্গে ছিলেন বড় ছেলে গুলশন। তবে শেষ রক্ষা করা যায়নি। বাঁচানো যায়নি ছোট্ট রাজাকে।

ছোট ছেলের মৃতদেহ নিয়ে ফিরতে গিয়ে বাবা দেখলেন ইতিমধ্যেই ফিরে গেছে অ্যাম্বুল্যান্স। এর পরে হাসপাতালকে একটি গাড়ির ব্যবস্থা করে দিতে অনরোধ করেন তিনি, তবে তাতে কাজ হয়নি। তাই নিথর সন্তানকে কাপড়ে মুড়ে কোলে নিয়েই হাসপাতাল থেকে চোখের জলে বেড়িয়ে আসেন বাবা। বড় ছেলের কাছে ছোট ছেলের মৃতদেহকে রক্ষা করতে দিয়ে গাড়ির খোঁজ করতে বের হয়ে যান। সেই মুহুর্তের ছবিই ধরা পড়েছে সাংবাদিকের ক্যামেরায়।

প্রায় আধঘণ্টা এভাবেই ভাইয়ের মৃতদেহ কোলে বসে ছিল গুলশন। কখন গাড়ি নিয়ে ফিরবেন বাবা, সেই পথের দিকেই বারে বারে তাকাচ্ছিল সে। জানা যাচ্ছে, শেষপর্যন্ত গাড়ির জোগাড় করতে পারেননি বাবা। তাঁদের অসহায় অবস্থায় এগিয়ে আসেন যোগেন্দ্র সিং নামের এক পুলিশকর্মী। তিনি হাসপাতালে গিয়ে কথা বলে একটি অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে দেন পুজরামদের ফেরার জন্য।


Sudipto

সম্পর্কিত খবর