অবশেষে কী বিধায়ক পদ থেকেও ইস্তফা? সকল জল্পনার অবসান ঘটালেন পার্থর আইনজীবী

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিগত ১২ দিনের ইডি (ED) হেফাজত শেষে বর্তমানে প্রেসিডেন্সি জেলে দিন কাটছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee)। আদালতে নির্দেশে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রয়েছেন প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) নেতা। এর মাঝে অবশ্য একটি বিষয় নিয়ে ক্রমশ জল্পনার পারদ চড়তে থাকে এবং সেটি হল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘বিধায়ক’ পদের ভবিষ্যৎ। সম্প্রতি, আদালতে পার্থর আইনজীবী জানান যে, তার মক্কেল বিধায়ক পদ থেকে অব্যাহতি চান। তবে এদিন শেষ পর্যন্ত সকল জল্পনার অবসান ঘটালেন পার্থ।

উল্লেখ্য, এসএসসি দুর্নীতি মামলায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে গ্রেফতার হন পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়  অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া কোটি কোটি নগদ অর্থের সঙ্গে পার্থর যোগসূত্র রয়েছে সন্দেহে দুজনকেই গ্রেফতার করে ইডি। ১২ দিন তাদের হেফাজতে রাখার পর অবশেষে আদালতের নির্দেশে দুই সপ্তাহের জেল হেফাজতে রয়েছেন পার্থ। বর্তমানে তাদের ঠিকানা প্রেসিডেন্সি জেল। এর মাঝে গতকাল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন  আইনজীবী সুকন্যা ভট্টাচার্য। এর পরেই তিনি বলেন, “গোটা বাংলায় এখন খবর ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে যে, পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিধায়ক পদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। উনি বিধায়ক হিসেবে থাকতে চান। এখনো পর্যন্ত দল এবং নেত্রীর (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) ওপর সম্পূর্ণ বিশ্বাস রয়েছে পার্থবাবুর।”

তবে গত শুক্রবার আদালতে সম্পূর্ণ ভিন্ন মন্তব্য করতে শোনা যায় পার্থর আইনজীবীকে। সেই সময় তিনি জানান যেজ বিধায়ক পদ ছাড়তেও রাজি রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এক্ষেত্রে অবশ্য ‘প্রভাবশালী’ তকমা মুছে দেওয়ার জন্যই তাঁর এই সিদ্ধান্ত বলে মত প্রকাশ করেন বিশেষজ্ঞরা। তবে শেষপর্যন্ত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে জেল হেফাজতেই পাঠায় আদালত। প্রসঙ্গত, বর্তমানে জেল হেফাজতে একপ্রকার শুয়ে বসে এবং কষ্টেই দিন কাটছে পার্থর। নাকতলার বিলাসবহুল জীবনযাপন ছেড়ে জেলের ভিতর একটি কোমডের উপর বসে ঝিমিয়েই প্রথম রাত কাটান তিনি। প্রথম দিন তাঁর জন্য বরাদ্দ ছিল না কোনো খাট কিংবা চেয়ার! পরবর্তীতে চিকিৎসকের সুপারিশের একটি খাট দেওয়া হয় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে। খাবারেও কেবলমাত্র চা এবং পাউরুটি গ্রহণ করে দিন কাটাচ্ছেন পার্থ।

অথচ এ সকল বিষয়কে ছাপিয়ে গত কয়েকদিনে প্রাক্তন তৃণমূল নেতার ‘বিধায়ক’ পদের ভবিষ্যৎ নিয়ে একাধিক জল্পনা উঠতে শুরু করে। একাধিক মহল দাবি করে যে, প্রভাবশালী তকমা মুছে দেওয়ার জন্যই বিধায়ক পদ ছাড়তে চলেছেন পার্থ। সম্প্রতি যেভাবে মহাসচিব পদের পাশাপাশি দল থেকে বহিষ্কার করা হয় পার্থকে। তারপর সেই জল্পনা আরো প্রকট হয়ে ওঠে। তবে এদিন পার্থর আইনজীবীর বক্তব্য বেশ চমকপ্রদ বলে মনে করা হচ্ছে।

Untitled design 87 2

গতকাল রাজনীতিতে আসা প্রসঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায়েরকে অনুশোচনা করতে শোনা গেলেও এদিন সুকন্যাদেবীর বক্তব্যতে স্পষ্ট যে, এখনো পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে পার্থর এবং তিনি কোনমতেই বিধায়ক পদ ছাড়তে প্রস্তুত নন। তবে পরবর্তী সময়ে এহেন রাজনৈতিক সমীকরণ কোন নতুন মোড় নেয়, সেদিকে তাকিয়ে সকলে।


Sayan Das

সম্পর্কিত খবর