বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একদিকে দুর্নীতি মামলায় একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়েছে শাসক দল; এর মাঝে আবার বিভিন্ন প্রান্তে দলের অন্দরে গোষ্ঠী কোন্দল ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সব মিলিয়ে বর্তমানে বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। এর মাঝেই এবার ভরা অনুষ্ঠান মাঝে তৃণমূল বিধায়ককে ‘মাতাল’ বলে বসলেন দলেরই পঞ্চায়েত প্রধান, যা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ালো গোটা এলাকায়।
ঘটনার কেন্দ্রস্থল জলপাইগুড়ির ডেঙ্গুয়াঝার চা বাগান এলাকা। গতকাল এলাকার একটি ফুটবল ময়দানে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে ‘বিশ্ব আদিবাসী দিবস’ পালন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ দাস, পাতকাটা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান হেমব্রম এবং আরো অনেকে।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই জলপাইগুড়ির রায়পুর চা বাগান বন্ধ পড়ে রয়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বহু মানুষের দুর্ভোগ চরমে আর সেই বিষয়টি উল্লেখ করেই গতকাল হেমব্রম বলেন, “আমাদের বিধায়ক মাতাল। বাদ দিন ওর কথা। নিজের ঘরই ঠিক মতো সামলাতে পারে না। আমাদের কথা উনি কি ভাববেন?” প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে পঞ্চায়েত প্রধানের এই বক্তব্যে প্রথমে সকলে হাসিতে ফেটে পড়লেও পরবর্তীতে তাঁর এই বক্তব্য চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ার পরই অস্বস্তি বেড়েছে শাসকদলের। হঠাৎ তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায় প্রসঙ্গে হেমব্রমের এহেন বক্তব্যের কারণ কি, তা নিয়ে ধন্দে ঘাসফুল শিবির।
শুধু তাই নয়, পরবর্তীতে হেমব্রম জানান, “যখন ভোট আসে, তখন রাজনৈতিক দলগুলি এখানে এসে কেবলমাত্র প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলে যায়। তবে একবার ভোট মিটে গেলে তারা আর ফিরেও তাকায় না। আদিবাসীদের ভোট নেওয়া হয়ে গেলেই তাদের উদ্দেশ্য মিটে যায়। বিগত বহুদিন ধরে চা বাগান বন্ধ পড়ে থাকলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় না।” পঞ্চায়েত প্রধানের এহেন মন্তব্যের পর স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় গোটা এলাকায়।
যদিও গতকাল অনুষ্ঠান চলাকালীন ড্যামেজ কন্ট্রোলে নামেন তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ দাস। তিনি জানান, “দীর্ঘদিন ধরে চা বাগান বন্ধ হয়ে রয়েছে। তবে আলোচনার মাধ্যমে খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হতে চলেছে। এখানে আদিবাসীদের সঙ্গে নিয়ে চা বাগান বহুদিন ধরে বেড়ে চলেছে। এটাই আমাদের সংস্কৃতি।”
উল্লেখ্য, গতকাল আদিবাসী দিবস উপলক্ষ্যে এলাকায় শোভাযাত্রার আয়োজন করার পাশাপাশি বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে সামিল হন অনেকে। তবে তার মাঝেই তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধানের বিতর্কিত মন্তব্য বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত করবে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।