বাংলাহান্ট ডেস্ক: রাজনৈতিক এবং বিনোদন জগৎ এখন একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে। অনেকে ইচ্ছাকৃত ভাবেই পা রাখেন রাজনীতিতে, অনেকের আবার অনিচ্ছা সত্ত্বেও নাম জড়ায় রাজনীতির সঙ্গে। এমনি একজন পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় (Koushik Ganguly)। তাঁর সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘লক্ষ্মী ছেলে’ নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে বয়কটের রাজনীতি।
পরিচালক নিজে অবশ্য রাজনীতির মঞ্চ থেকে দূরেই থাকেন। শুধু একবারের ঘটনা বাদ দিয়ে। ২০১৬ সালে টিটাগড় এবং দমদমে তৃণমূলের সভামঞ্চে বক্তৃতা দিয়েছিলেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। তবে ওই প্রথমবার আর ওই শেষবার। সম্প্রতি জি ২৪ ঘন্টার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে পরিচালক বলেন, ওই একদিনেই তিনি বুঝে গিয়েছিলেন যে ওই মঞ্চটা তাঁর জন্য নয়।
কারণ হিসাবে পরিচালক বলেন, শারীরিক মানসিক কোনো দিক দিয়েই হজম করা সম্ভব নয় তাঁর পক্ষে। ভবিষ্যতেও নিজেকে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত থাকতে দেখতে পাচ্ছেন না বলে জানান কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর মতে, একটা শহরে যারা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব আছেন তাদের কাছে বিভিন্ন প্রস্তাব আসে। রাজ্য সরকারের কমিটিতে বোর্ড অফ ডিরেক্টরসে তাঁর নাম রয়েছে বলে জানান কৌশিক। কিন্তু তিনি কোনোদিন কোনো বৈঠকে যাননি।
বিনোদন জগতের লোকদের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে ফেলা হয়, একথা স্বীকার করেছেন কৌশিক। সরকার পরিবর্তনের সময়েও আবেগের বশে অনেকে পথে নেমেছিলেন। কিন্তু রাজনীতিটা শিল্পীদের জন্য নয় বলেই মনে করেন পরিচালক। কারণ শিল্পীদের মন খুব নরম হয়, আর রাজনীতিতে আবেগের জায়গা নেই।
‘লক্ষ্মী ছেলে’তে বাবুল সুপ্রিয়র অভিনয় করার প্রসঙ্গে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় স্পষ্ট জানান, “বাবুল সুপ্রিয় আমার ছবিতে অভিনয় করেছেন এতে বিজেপির কিছুই যায় আসে না। কোনো রাজনৈতিক দল আমার কিচ্ছু করতে পারবে না। আগেও বলেছি, আবার বলছি, কোনো রাজনৈতিক দল কথা রাখে না।”
বিভিন্ন সময়ে একাধিক বার প্রশ্ন উঠেছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে পার্থক্য নিয়ে। একই প্রশ্নের সম্মুখীন হন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ও। উত্তর দিতে গিয়ে একটি স্মৃতি শেয়ার করেন পরিচালক।
তিনি জানান, তাঁর শ্বশুরমশাই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সহপাঠী ছিলেন। কিন্তু প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কখনোই কথা বলেননি তাঁর সঙ্গে। অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পূর্ণ উলটো মেরুর মানুষ। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় অকপটে স্বীকার করেন, তাঁর শ্বশুরবাড়ি বামপন্থী তা জেনেও চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়ের দাদুর অসুস্থতার সময়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। পরিচালক জাতীয় পুরস্কার পাওয়ার পরেও ফোন করেছেন। এটা তাঁর ভাবনার বাইরে ছিল বলেই জানান কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়।