পাখির ডিম এবং বুনো ফল খেয়েই বেঁচে ছিলেন ৫ সপ্তাহ! অ্যামাজনের জঙ্গল থেকে উদ্ধার দুর্ঘটনাগ্রস্ত পাইলট

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ব্রাজিলে (Brazil) অবস্থিত অ্যামাজনের জঙ্গলকে (Amazon Rainforest) বিশ্বের বৃহত্তম ঘন এবং ভয়াবহ জঙ্গল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। পাশাপাশি, এটি অক্সিজেনেরও একটি বড় উৎস। এই বনে এমন অনেক জায়গা আছে, যেখানে সূর্যের আলো পর্যন্ত পৌঁছয় না। এছাড়াও অ্যামাজন বিপজ্জনক সব প্রাণী ও বিষাক্ত গাছপালায় পরিপূর্ণ রয়েছে। যা মুহূর্তের মধ্যে মানুষকে মেরে ফেলতে পারে। এমতাবস্থায়, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা এমন একজনের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যিনি ৩৬ দিন যাবৎ অ্যামাজন জঙ্গলে আটকা পড়েছিলেন। প্রতি মুহূর্তে থাকা বিপদের মধ্যেও তিনি টিকে ছিলেন কোনোমতে। পাশাপাশি, তাঁকে উদ্ধারও করা হয়েছে।

অ্যামাজনের জঙ্গলে হারিয়ে গেলেন পাইলট: আমরা সকলেই জানি যে, পাইলটের জীবনে যেকোনো মুহূর্তেই বড় বিপদ নেমে আসতে পারে। আর সেই বিপদকেই খুব কাছ থেকে উপলব্ধি করলেন পর্তুগালের অ্যান্টোনিও সেনা নামে একজন পাইলট। জানা গিয়েছে, ২০২২ সালের ২৮ জানুয়ারি তিনি অ্যালেনকার শহর থেকে একটি বিমান উড়িয়েছিলেন। এমতাবস্থায়, অ্যান্টোনিওর সেই বিমানটিকে অ্যালমেরিয়াম শহরে নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ওই যাত্রা শেষ হওয়ার আগেই বিমানটিতে প্রযুক্তিগত ত্রুটি দেখা দেয়। যার ফলে মাঝপথেই বিমানটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেলেও কোনোমতে বেঁচে যান তিনি।

এদিকে, অ্যান্টোনিওর যখন জ্ঞান ফিরে আসে তখন তিনি বুঝতে পারেন যে, একটি গভীর জঙ্গলে উপস্থিত হয়েছেন। পাশাপাশি, তিনি যে অ্যামাজনের জঙ্গলেই রয়েছেন সেটিও উপলব্ধি করতে পারেন অ্যান্টোনিও। যদিও, ওই বিমান দুর্ঘটনার ফলে তিনি আহতও হয়েছিলেন। যে কারণে ওই জঙ্গল থেকে একা বেরিয়ে আসাটাও তাঁর কাছে এক বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। কিন্তু তিনি হাল ছাড়েননি। বরং, ওই অবস্থাতেই অ্যান্টোনিও জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজতে শুরু করেন।

এমনকি, ওই কঠিন সময়ে ক্ষুধা নিবারণের জন্য তাঁকে পাখির ডিম এবং বুনো ফলও খেতে হয়েছে। ঐভাবে প্রায় ৫ সপ্তাহ যাবৎ অ্যামাজনের ঘন জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানোর পর অবশেষে উদ্ধারকারী দল অ্যান্টোনিওকে খুঁজে পান এবং তাঁকে উদ্ধার করে পর্তুগালে নিয়ে আসা হয়।

F5JH7L4J4UPJMZTJANUHNNAJFM

দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার পর ওই পাইলটকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁকে। এদিকে, ইতিমধ্যেই এই খবর ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে। অ্যামাজনের মত জঙ্গলে যেখানে জীবনহানির সম্ভাবনা প্রায় নিশ্চিত থাকে সেখানে অ্যান্টোনিও আহত হওয়া সত্বেও সাহস অবলম্বন করে উদ্ধার হওয়ার জন্য লড়াই জারি রেখেছিলেন। এমতাবস্থায়, তাঁর ওই সাহসকেই কুর্ণিশ জানাচ্ছেন সকলেই।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর