বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ‘সেদিন তুই ছিলি কোথায়? আমি হেরে যাওয়ার পর রি কাউন্টিং চেয়েছিলিস?’ গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। পরমুহূর্তেই আবার নরম সুরে বলেন, “তোকে আমি স্নেহ করি।” গতকাল খড়্গপুরে (Kharagpur) দলীয় বৈঠক চলাকালীন শেখ সুফিয়ানকে (Sheikh Sufiyan) উদ্দেশ্য করে এভাবেই একের পর এক মন্তব্য ছুড়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
শেখ সুফিয়ানের পরিচয় জানতে ফিরে যেতে হবে গত বিধানসভা নির্বাচনে। উল্লেখ্য, গত বিধানসভায় বিপুল পরিমাণ ভোটে জয়লাভ করলেও নন্দীগ্রামে প্রেস্টিজ ফাইটে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কাছে শেষ পর্যন্ত পরাজিত হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরবর্তীতে অবশ্য ভোটে কারচুপি হয়েছে বলে অভিযোগ ছুড়ে দেয় তৃণমূল শিবির আর সেই ভোটেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী এজেন্ট পদে নিযুক্ত ছিলেন এই শেখ সুফিয়ান।
গতকাল পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের বিধায়ক এবং জেলা পরিষদ সদস্যদের নিয়ে একটি বৈঠকের আয়োজন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে সুফিয়ানের পাশাপাশি বিজেপি এবং শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ করে মন্তব্য প্রকাশ করেন তিনি।
নন্দীগ্রাম আন্দোলনের কথা তুলে ধরে মমতা বলেন, “নন্দীগ্রাম আন্দোলন যখন হয়েছিল, তখন কোথায় ছিল বাপ-বেটা? আনিসুর রহমানের বাইকে করে আমি নন্দীগ্রামের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত ঘুরে বেড়িয়েছি। ওরা কোথায় ছিল?” যদিও মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের পাল্টা জবাবে শুভেন্দুর পিতা তথা বর্তমান তৃণমূল কংগ্রেস নেতা শিশির অধিকারী বলেন, “এক সময় বলছেন, আমরা কোন কিছুতে জড়িত ছিলাম না। আবার একসময় সবটাই আমাদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছেন। ওনার কথার কোন মাথামুণ্ডু নেই। তাই যত কম মন্তব্য প্রকাশ করা যায়, ততই ভালো।”
উল্লেখ্য, বর্তমানে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি পদে নিযুক্ত রয়েছেন শেখ সুফিয়ান। এদিন তাকে উদ্দেশ্য করে মমতা প্রশ্ন করেন, “সেই দিন তুই কোথায় ছিলি? আমি হেরে যাওয়ার পর রি কাউন্টিং চেয়েছিলিস?” পরবর্তীতে অবশ্য সুফিয়ান জানান, “দিদি আপনাকে ভুলবার্তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। আমি সেই দিন গণনা কেন্দ্রে ছিলাম।” পরবর্তীতে তিনি বলেন, “আমি আপনার সাথেই ছিলাম, আছি আর থাকবো।”
সুফিয়ানের এ বক্তব্যে সুর কিছুটা নরম করেন মুখ্যমন্ত্রী এবং পরবর্তীতে বলেন, “আমি তাকে স্নেহ করি।” সাম্প্রতিক সময়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে ল সুফিয়ানের একাধিক বিষয় নিয়ে দূরত্ব সৃষ্টি হয় বলে জল্পনা উঠতে শুরু করে। তবে এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর যাবতীয় জল্পনা উড়িয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি বলেন, “উনি আমাকে স্নেহ করেন। নন্দীগ্রামে আন্দোলনের সময় থেকে আমরা একে অপরকে চিনি।”
যদিও এ বিষয়কে কেন্দ্র করে মুখ্যমন্ত্রীকে খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপি নেতা অসীম মিশ্র বলেন, “নন্দীগ্রামে হার কখনোই ভুলবেন না মুখ্যমন্ত্রী। সেই কারণে এখানে আসলেও পূর্ব মেদিনীপুরে থাকেন না উনি।”