বাংলাহান্ট ডেস্ক : বড়ই খারাপ সময় চলছে পাকিস্তানের (Pakistan)। একদিকে বন্যায় বিপর্যস্ত অবস্থা। টান পড়েছে খাদ্য দ্রব্যে। এরই সঙ্গে কামড় দিচ্ছে ডেঙ্গি। এই জোড়া ফলায় জেরবার পাকিস্তান। গত কয়েকদিন ধরেই প্রবল বন্যার জেরে বিদ্ধস্ত গোটা দেশ। এর মধ্যেই দেখা দিয়েছে ডেঙ্গির প্রকোপ। মশাবাহিত এই রোগ ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি হয়ে উঠবে আরও ভয়াবহ। তা মানছে ইসলামাবাদ (Islamabad)। কিন্তু এখনি উপায় কী? দেশের প্রায় এক তৃতীয়াংশই এখনও জলের তলায়। কীভাবে মোকাবিলা করা হবে এই অবস্থার? ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়লে পাকিস্তানে মৃত্যুর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে বলে একরকম জানিয়েছে শাহবাজ শরিফ সরকার।
গত কয়েকদিন ধরে জলস্তরই বেশি থাকার পর কিছু কিছু জায়গায় তা নামতে শুরু করেছে। জল সামান্য নামতেই সিন্ধু প্রদেশে দেখা দিয়েছে ডেঙ্গির মারাত্মক প্রকোপ। এছাড়াও কলেরা বা ডায়েরিয়ার মতো জলবাহিত রোগগুলিও দ্রুত হারে ছড়িয়ে পড়ছে বন্যা দুর্গত এলাকায়। পাক সরকারের দেওয়া তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, বন্যার কারণে প্রতিদিন গড়ে মৃত্যু হচ্ছে প্রায় ৪০ জনের।
অন্যদিকে বন্যা বিধ্বস্ত এলাকাগুলিতে মশা ও জল বাহিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা দিনে গড়ে ১০০ ছাড়িয়েছে। এদের অধিকাংশই ত্রাণ শিবিরে থাকায় সেখানেও ছড়িয়ে পড়ছে রোগ। পরিস্থিতি সামলাতে বেশ কিছু ত্রাণ শিবিরে চিকিৎসকদের দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামাবাদ।
দেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে পাক সরকারের দাবি, মোট সাড়ে ৩ কোটি মানুষ এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বন্য়া বাড়ি-ঘর তো বটেই, হোটেল, বাজার, চাষজমি, সেতু, রাস্তা – সব কিছুই ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে। ইসলামাবাদের দাবি, এখনও পর্যন্ত এই বন্যায় ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতি হয়েছে। অতিরিক্তি বৃষ্টি এবং তার সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিম পাকিস্তানে হিমবাহ গলে যাওয়ার জেরেই এই বিপর্যয় নেমে এসেছে বলে জানিয়েছে পাক সরকার।
বন্যার জেরে পাকিস্তানে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৫৪৫ জনের। অন্যদিকে আহতের সংখ্যা ১২ হাজারেরও বেশি। গত কয়েক বছর ধরে মারাত্মক আর্থিক সংকটে ভুগছে পাকিস্তান। এই বন্যা পরিস্থিতির জন্য সেই সংকট যে আরও বৃদ্ধি পেল।
বন্যা শুরু হওয়ার আগে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ৩.৫ শতাংশ হবে বলে আশা করা হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে সেটা আর সম্ভব নয়। এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার-র থেকে ঋণ পাওয়াও পাক সরকারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল।