পছন্দ হিন্দু সংস্কৃতি, সনাতনী রীতি মেনে বারাণসীর মন্দিরে বিয়ে সারলেন মুসলিম যুগল

বাংলাহান্ট ডেস্ক : ধর্মমতে তাঁরা মুসলিম। কিন্তু বিয়ে করলেন হিন্দু রীতি (Marraige in Hindu Rituals) অনুসারে। অদ্ভুত এই কাণ্ড ঘটানো আমেরিকার বাসিন্দা এই নবদম্পতিকে নিয়েই এখন চর্চা চলছে দেশ জুড়ে। কিয়ামা দিন খলিফা এবং কেশা খলিফা। পরস্পরকে চেনেন বহু বছর ধরেই। তবে প্রেমের সম্পর্কে রয়েছেন প্রায় ৮-৯ বছর ধরে। আমেরিকায় দু’জনে একসঙ্গেই থাকতেন। সামাজিক মতে বিয়ে করে সম্পর্ককে আনুষ্ঠানিক সিলমোহর দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা তাঁদের ছিল না।

বছর কয়েক আগে যুগলে বারাণসী ঘুরতে গিয়েছিলেন। মন্দির দর্শনের সময় হিন্দু বিয়ের অনুষ্ঠান দেখেন তাঁরা। সিঁদুর দান, গাঁটছড়া বাঁধা, সাতপাক ঘোরা— হিন্দু বিয়ের রীতিনীতি বেশ ভাল লেগে যায় কিয়ামা এবং কেশার। সেই সময়ে দু’জনে ঠিক করে নেন, যদি কোনও দিন বিয়ে করেন, তা হলে হিন্দু রীতি মেনেই করবেন।

সেই ঘটনার পাঁচ বছর পর বিয়ে করবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন কিয়ামা এবং কেশা। সেই মতো আমেরিকা থেকে বারাণসী আসেন দু’জনে। পুরো বিষয়টি যে এত সহজেই হবে, তা ভাবতেই পারেননি। তাঁরা নিশ্চিত ছিলেন মুসলিম হয়ে হিন্দু মতে বিয়ে করতে গেলে বাঁধা আসবেই। কিন্তু আদতে সে সব কিছুই হয়নি। তাঁদের ইচ্ছার কথা জেনে মন্দিরের পুরোহিত সব নিয়ম মেনেই বিয়ে দেন দু’জনের।

সম্প্রতি, ভারতের উত্তর ২৪ পরগনার মছলন্দপুরের হিন্দু ধর্মাবলম্বী বসু বাড়িতে মুসলিম রীতি মেনে বিয়ে হলো খালেদা ও সুজনের। মুসলিম নিয়ম মেনে বিয়ের পর হিন্দু মতে মালাবদল হলো উলুধ্বনির মাধ্যমে। আর এই দৃশ্যের সাক্ষী থেকে নবদম্পতিকে আশীর্বাদ করলেন কয়েকশ অতিথি। পাত্রী খালেদা খাতুনের বয়স যখন সাত বছর; দুই ভাই ও ছয় বোনের অভাবের সংসার। সবার ছোট খালেদা। স্বামীকে হারিয়ে সংসারের হাল ধরতে খালেদার মা মছলন্দপুরের রাজবল্লভপুর গ্রামের বসু বাড়িতে পরিচারিকার কাজ নেন।

অভাবের কারণে খালেদাও পড়াশোনা ছেড়ে মায়ের সঙ্গেই কাজ শুরু করেন। সেই থেকে এখনও বসু বাড়িতেই পরিচারিকার কাজ করেন মা, মেয়ে। তবে বসু পরিবার খালেদাকে পরিচারিকা বলতে নারাজ। খালেদাকে তারা বসু পরিবারের বড় মেয়ে হিসেবেই দেখেন। প্রায় ১০ বছর ধরে এই বসু বাড়িতেই কাজ করছেন তিনি। এখন পরিবারের একজন অন্যতম সদস্য হয়ে উঠেছেন খালেদা। আর পাত্র বাদুড়িয়ার ঘোষপুরের সুজন মণ্ডল গাড়ি চালানোর কাজ করেন বসু বাড়িতেই।

Sudipto

সম্পর্কিত খবর