বাংলা হান্ট ডেস্ক: তুরস্কের প্রেসিডেন্ট (President Of Turkey) রিচেপ তাইয়্যেপ এরদোগান (Recep Tayyip Erdoğan) ফের একবার জাতিসংঘের মহাসভায় জম্মু ও কাশ্মীরের ইস্যুটি তুলেছেন। এদিকে, ভারতের পক্ষ থেকে তীব্র আপত্তি জানানোর পরও এরদোগান এই কাজ করেছেন। এমতাবস্থায়, ভারতও তুরস্ককে উদ্দেশ্য করে সাইপ্রাসের প্রসঙ্গটি তুলেছে। শুধু তাই নয়, এরদোগানের এহেন বিবৃতির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই, ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর (S. Jaishankar) তুর্কির বিদেশমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলুর (Mevlüt Çavuşoğlu) সাথে দেখা করেন এবং সাইপ্রাসের বিষয়টি উপস্থাপিত করেন।
এদিকে, এই বৈঠকের প্রসঙ্গে জয়শঙ্কর একটি টুইটও করেছেন। তিনি লিখেছেন, “তুরস্কের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয়েছে এবং তাঁর সঙ্গে একাধিক বিষয়ে কথা হয়েছে। যেগুলির মধ্যে ইউক্রেনের সঙ্কট সংক্রান্ত আলোচনাও হয়েছে। এছাড়াও, খাদ্য নিরাপত্তা, G20 দেশ এবং সাইপ্রাসের প্রসঙ্গও সামিল ছিল।” প্রকৃতপক্ষে, সাইপ্রাস ইস্যুটি তুরস্কের জন্য সর্বদা বেদনাদায়ক একটি ব্যাপার। এমতাবস্থায়, কাশ্মীর নিয়ে কথা বলার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতও এবার সাইপ্রাস প্রসঙ্গটি তুলে ধরেছে। স্বাভাবিকভাবেই, ভারতের এই কূটনীতিকে তুরস্কের কাশ্মীর সংক্রান্ত ইস্যুর উপযুক্ত জবাব হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
জানিয়ে রাখি যে, ১৯৭৪ সালে যখন তুরস্ক সাইপ্রাসকে আক্রমণ করে তার উত্তর অংশ দখল করে নিয়েছিল তখন থেকেই সাইপ্রাস সঙ্কট শুরু হয়। এদিকে, সামরিক অভ্যুত্থানের ফলে সাইপ্রাসের পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করে এবং এর সুযোগ নিয়ে তুরস্ক তা দখল করে নেয়। এরপর থেকেই সংশ্লিষ্ট বিষয়টি যাতে জাতিসংঘের সাথে আলোচনা করে সমাধান করে নেওয়া যায় সেই বিষয়ে ভারত সমর্থন জানিয়ে আসছে।
ভারত সাইপ্রাসের ইস্যুটি তুলেছে: প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, সাইপ্রাসের সাথে ভারতের সবসময়ই একটি ভালো সম্পর্ক রয়েছে। পাশাপাশি, গত ৫ দশক ধরে কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের অবস্থানকে তারা সমর্থন করে আসছে। এদিকে, জয়শঙ্কর এবং তুরস্কের বিদেশমন্ত্রীর সাক্ষাতের কয়েক ঘন্টা আগে জাতিসংঘে ভাষণ দিতে গিয়ে এরদোগান জানিয়েছিলেন যে, “ভারত ও পাকিস্তান স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হওয়ার ক্ষেত্রে ৭৫ বছর অতিক্রান্ত করেছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত দু’টি দেশের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক নেই। এটা দুর্ভাগ্যজনক। আমরা আশা করি, কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হবে এবং স্থায়ী শান্তি আসবে।” এদিকে, গত কয়েক বছরে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বেশ কয়েকবার জাতিসংঘের মহাসভায় কাশ্মীর ইস্যুকে তুলে এনেছেন।
২০২০ এবং ২০২১ সালেও তুরস্ক এটি করেছিল: এর আগে ২০২১ সালে, এরদোগান কাশ্মীরের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে জানিয়েছিলেন যে, “আমরা আশা করি উভয় পক্ষই শান্তিপূর্ণভাবে এই সমস্যার সমাধান করবে।” পাশাপাশি, ২০২০ সালেও তিনি এই বিষয়টি তুলে ধরেন। যদিও, দু’বারই ভারত যোগ্য জবাব দেয়। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, সম্প্রতি, তুরস্কের রাষ্ট্রপতি এরদোয়ান এসসিও শীর্ষ সম্মেলনের মাঝে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে দেখা করেছিলেন। মূলত, বর্তমান সময়ে তুরস্ক গভীর অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায়, তাঁদের এই সাক্ষাৎপর্বকে ব্যবসায়িক সম্পর্ক উন্নয়নের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।