বাংলাহান্ট ডেস্ক : রাষ্ট্রসংঘের (UN) অধিবেশনে রীতিমতো ক্ষোভ উগড়ে দিলেন ইউক্রেনের (Ukraine) রাষ্ট্রপতি ভলোদমির জেলেনস্কি (Volodymyr Zelensky) । বৃহস্পতিবার তিনি বলেন ইউক্রেনের উপর রাশিয়া (Russia – Ukraine War) আক্রমণ করেছে বহু মাস আগেই। কিন্তু বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর রাষ্ট্র আমেরিকা (US) এক প্রকার নিশ্চুপ। এই আক্রমণের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপই গ্রহণ করেনি হোয়াইট হাউস। তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন ভারত (India) এবং জাপান (Japan) এখনও কেন রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের (UNSC) স্থায়ী সদস্য নয়? এদিন জেলেনস্কি ক্ষোভ প্রকাশ করেন রাষ্ট্রসংঘের নীতি নিয়েও।
জেলেনস্কি এদিন দাবি করেন, ‘আমাদের প্রচেষ্টা সবসময়ই শান্তি প্রতিষ্টা করা। উত্তর থেকে দক্ষিণ, বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠাই রাষ্ট্রসংঘের মতো আমাদেরও উদ্দেশ্য। কিন্তু এই বিষয়ে রাশিয়াকে কোনও কথা বলতে কেউ শুনেছে কোনওদিন? অথচ রাশিয়া রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য। রাশিয়া কেন এই পদে থাকবে? কি কারণ যে ভারত, জাপান ব্রাজিল বা ইউক্রেন স্থায়ী সদস্য হতে পারে না? এমন একটি দিন নিশ্চয়ই আসবে যেদিন এই সমস্যারও সমাধান হবে।’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভারত নিজেও বহুবার চেয়েছি নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদ লাভ করার। ভারতের পক্ষ থেকে বহুবার দাবি করা হয় দেশ নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্য হওয়ার জন্য উপযুক্ত। বর্তমানে রাষ্ট্রসংঘের ৫ টি স্থায়ী সদস্যপদ এবং ১০ টি অস্থায়ী সদস্যপদ রয়েছে। প্রতি ২ বছর অন্তর এই অস্থায়ী সদস্যপদের জন্য দেশের নাম নির্বাচন করা হয়। নিরাপত্তা পরিষদের ৫ স্থায়ী সদস্য দেশ হল রাশিয়া, ব্রিটেন, আমেরিকা, চিন এবং ফ্রান্স। স্থায়ী সদস্যদের কাছে থাকে ভেটো ক্ষমতা। যে ক্ষমতার বলে তারা যেকোনও সিদ্ধান্তকে বাতিল করে দিতে পারে। ঠিক যেভাবে নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্য হওয়ার রাস্তায় কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে চিন। বারবার ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার করে ভারতের পরিকল্পনায় জল ঢেলে দেয় ড্রাগনের দেশ।
রাশিয়ার আক্রমণের জন্য রাষ্ট্রসংঘকেই দায়ি করেন জেলেনস্কি। রাশিয়ার অধিকারে থাকা ইউক্রেনে ভূখণ্ড ফিরিয়ে দেওয়ারও দাবি জানান তিনি। রাশিয়ার সঙ্গে উইক্রেনের যুদ্ধ হতে চলল প্রায় ৭ মাস। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ করেন আমেরিকা। ইতিমধ্যেই গত বুধবার ইউক্রেনে তিন লক্ষ সেনা মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেয় রাশিয়া। রাশিয়ার দাবি পশ্চিমী দেশগুলি রাশিয়াকে ধ্বংস করার পরিকল্পনায় রয়েছে।
জেলেনস্কির মন্তব্যের পর সরব হন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তা পরিষদে ভারত স্থায়ী সদস্য না হওয়া শুধু ভারতের জন্য নয়, পুরো বিশ্বের জন্যই ক্ষতি। এই নিয়মে অনেক আগেই পরিবর্তন আনা দরকার ছিল। জয়শংকরকে জিজ্ঞাসা করা হয়, নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হতে ভারতের কত সময় লাগবে? তিনি এর উত্তরে বলেন, দেশ এই বিষয়ে জোর কদমে কাজ করছে।