বাংলাহান্ট ডেস্ক : আজ কেরল বনধের (Kerala Strike) ডাক দেয় পিএফআই (PFI) বা পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া। গতকাল ১৫টি রাজ্যে একযোগে তল্লাশি চালায় এনআইএ (NIA)। জঙ্গি যোগ, জঙ্গি মদত এবং জঙ্গি কার্যকলাপে আর্থিক সাহায্যের অভিযোগে ৪৫ জন পিএফআই নেতাকে গ্রেফতার করা হয় গতকালই। তারই প্রতিবাদে সংগঠনের পক্ষ থেকে আজ কেরল বনধের ডাক দেওয়া হয়।
এনআইএ-র ব্যাপক অভিযানের প্রতিবাদে আজ কেরলে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন পিএফআই সমর্থকরা। আর এই বিক্ষোভ রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। তিরুবনন্তপুরম, কোল্লাম, কোঝিকোড় এবং আলাপ্পুঝায় ভাঙচুর এবং হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছে পাথর। এই ঘটনায় পিএফআই নেতাদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো ‘নোটিস’ জারি করল কেরালা হাইকোর্ট। প্রতিবাদের নামে এই আক্রমণের বিরুদ্ধে অবিলম্বে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বিনা নোটিসে হরতাল আগেই নিষিদ্ধ করা হয়। অন্তত সাতদিন আগে নোটিস দিতে হবে বলে জানিয়েছিল হাই কোর্ট।
রাজ্য জুড়ে এই হরতালে সমর্থনকারীদের হাতে একটি অটো-রিকশা এবং একটি চার চাকা গাড়ি ভাঙচুর হয় বলে জানা যাচ্ছে। কেরল স্টেট রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের একটি বাসও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কান্নুর জেলার নারায়ণপাড়া এলাকায় সংবাদপত্র নিয়ে যাচ্ছিল একটি গাড়ি। সেটিকে লক্ষ্য করে পেট্রল বোমা ছোড়া হয়। যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার এমন ঘটনা ঘটেছে আরও একাধিক। ১৫ বছর বয়সি এক কিশোরী এবং এক অটো-রিকশা চালক পাথর ছোড়ার ঘটনায় আহত হয়েছেন। পিএফআই সমর্থকদের আক্রমণে আহত হয়েছেন অ্যান্টনি এবং নিখিল নামে দুই পুলিসকর্মীও। জানা যাচ্ছে, কোয়েম্বাটুরে বিজেপির সদর দফতরেও হামলা চালায় পিএফআই। প্রোটল বোমা ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ।
প্রসঙ্গত, গতকাল ভোর রাত থেকে ১৫টি রাজ্যের ৯৩টি জায়গায় তল্লাশি অভিযান শুরু করেছিল ইডি। কেরল,তামিলনাড়ু, কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, তেলেঙ্গানা, উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান, দিল্লি, অসম, মধ্যপ্রদেশ, গোয়া, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, মণিপুরে প্রায় ৩০০ এনআইএ অফিসার একযোগে তল্লাশি চালায়। পুরো অভিযানের তদারকি করেছেন এনআইএ-র ডিজি।
দায়ের হওয়া ৫টি মামলায় মোট ১০৬ জন পিএফআই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার মধ্যে ৪৫ জন নেতা। সর্বাধিক গ্রেফতারি হয়েছে কেরল থেকে। সেখানে ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারপরেই রয়েছে তামিলনাাড়ু। সেখান থেকে ১১জনকে গ্রেফতার করা হয়। এছড়া কর্নাটক থেকে ৭ জন, অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে ৪, রাজস্থান থেকে ২, তেলেঙ্গানা এবং উত্তর প্রদেশ থেকে ১ জন করে গ্রেফতার করা হয়েছে। মোট ৬১ জন ক্যাডেরসকে গ্রেফতার করেছে ইডি এবং পুলিস।
এনআইএ-র দাবি পিএফআই নেতারা একাধিক জায়গায় জঙ্গি কার্যকলাপ, এবং জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করত। তারা অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণও দিত। তল্লাশিতে প্রচুর টাকা, অস্ত্র এবং বিপুল ডিজিটাল ডিভাইস উদ্ধার করা হয়েছে। এনআইএ অভিযােনর প্রতিবাদে কেরল এবং কর্নাটকে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সংগঠনের সদস্যরা। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগানও তুলেছে তারা। তারই প্রতিবাদে শুক্রবার কেরলে ১২ ঘণ্টার বনধের ডাক দিয়েছে সংগঠন।