বাংলা হান্ট ডেস্ক: একের পর এক সঙ্কটে রীতিমতো জর্জরিত অবস্থা ভারতের পড়শি দেশ পাকিস্তানের (Pakistan)। কখনও ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় আবার কখনও বা অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখোমুখি হয়ে নাজেহাল অবস্থা সেখানকার মানুষের। এদিকে, সম্প্রতি তুমুল বন্যার প্রকোপে ইতিমধ্যেই সেখানে প্রভাবিত হয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। যার জেরে ভেঙে পড়েছে সে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা।
এমনিতেই, বিগত কয়েক মাস ধরে পাকিস্তানের অর্থনীতি ক্রমশ নিম্নমুখী অবস্থান বজায় রেখেছে। এমতাবস্থায়, ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ-ও ক্ষমতা হারায় সে দেশে। তারপরই প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন হন পাকিস্তানের প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাই শাহবাজ শরিফ। তবে, তারপরেও ওই দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কোনোরকম উন্নতি ঘটেনি। সর্বোপরি, দেশের মানুষের প্রাথমিক চাহিদাটুকু পূরণেও ব্যর্থ হয়েছে সরকার। শুধু তাই নয়, জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের অভাবও ক্রমশ স্পষ্ট হয়েছে দেশজুড়ে।
এমনকি, পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয়েছে যে, এবার তেলের অভাবে প্রায় স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে পাকিস্তানের ট্রেন পরিষেবা। এই প্রসঙ্গে “দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন”-কে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা ANI সূত্রে জানা গিয়েছে যে, পাকিস্তানে রেল পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ার পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। যেগুলির মধ্যে সবচেয়ে প্রধান কারণ হল বন্যা। একটানা বন্যার কারণে যাত্রীর অভাবে উল্লেখযোগ্যভাবে আয় কমেছে পাকিস্তান রেলের। এছাড়াও, বন্যার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পরিকাঠামোগত ব্যবস্থারও।
পাশাপাশি, বর্তমান সময়ে একাধিক স্টেশনে ডিজেলের চরম অভাবও পরিলক্ষিত হয়েছে। এই প্রসঙ্গে পাওয়া খবর অনুযায়ী, লাহোরের ইঞ্জিন শেডে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত মাত্র ৯০ হাজার লিটার ডিজেল অবশিষ্ট ছিল। এদিকে, ফয়সলাবাদ স্টেশনে মাত্র একদিনের চলার মত ডিজেল রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও, সবচেয়ে খারাপ অবস্থা মুলতান ও শুক্কুর ডিভিশনের। এদিকে, “দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন” আরও জানিয়েছে যে, এখন লাহোর ও রাওয়ালপিন্ডির মধ্যে মাত্র একটি ট্রেন চলাচল করছে।
একই অবস্থা পেশোয়ার ও সিন্ধ প্রদেশের রহরি স্টেশনের মধ্যেও। সেখানেও বর্তমানে একটি মাত্র ট্রেন চলাচল করছে। যদিও, পাকিস্তান রেলের অ্যাডিশনাল জেনারেল ম্যানেজার আমির বালোচ ডিজেলের কোনো অভাব নেই বলে দাবি করেছেন। পাশাপাশি, একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে ডিজেল কেনা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। এমতাবস্থায়, সরকারের হাতে ডিজেল থাকার দাবি জানানো হলেও ডিজেলের জন্য কেন বেসরকারি সংস্থার দ্বারস্থ হতে হচ্ছে এই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।