বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার মধ্যপ্রদেশের কুনো ন্যাশনাল পার্ক (Kuno National Park) থেকে মিলল বড় সুখবর! সম্প্রতি সেখানে সুদূর নামিবিয়া (Namibia) থেকে নিয়ে আসা হয় আটটি চিতাবাঘ। তাদের মধ্যে একটি মহিলা চিতার নাম “আশা” রাখেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। এবার সেই আশাই নতুন আশার সঞ্চার করেছে সকলের মনে। ইতিমধ্যেই মনে করা হচ্ছে যে, ওই মহিলা চিতাটি গর্ভবতী হয়েছে। এমতাবস্থায়, দীর্ঘ সাত দশক পর দেশে চিতার জনসংখ্যা বৃদ্ধির দিকে এটি অবশ্যই একটি আশার খবর। তবে যে দাবি করা হচ্ছে তা সত্য কি না তা অক্টোবরের শেষেই পরিষ্কার হবে।
এই প্রসঙ্গে কুনো ন্যাশনাল পার্কের চিতা পর্যবেক্ষণকারী কর্মকর্তারা বলেছেন, আশা নামক মহিলা চিতাটি এখন অপ্রত্যাশিত আচরণ করছে। এছাড়াও তার শারীরিক লক্ষণ দেখে অনুমান করা হচ্ছে যে, চিতাটি গর্ভবতী হয়েছে। এমতাবস্থায়, নামিবিয়ার চিতা কনজার্ভেশন ফান্ডের (সিসিএফ) একজিকিউটিভ ডাইরেক্টর ল্যরি মার্কার বলেছেন, “আশা যদি গর্ভবতী হয় সেক্ষেত্রে এটি তার প্রথম গর্ভাবস্থা। নামিবিয়ার জঙ্গল থেকে তাকে ধরা হয়েছিল। অর্থাৎ, সে নিশ্চয়ই বনের মধ্যেই কোনো পুরুষ চিতার সংস্পর্শে এসেছে। সে গর্ভবতী হলে আমাদের গোপনীয়তা বজায় রাখতে হবে। চুপ থাকতে হবে। মানুষকে তার আশেপাশে যাওয়া থেকেও বিরত রাখতে হবে। বাচ্চাদের খাঁচায় রাখার জন্য একটি খাঁচাও তৈরি করতে হবে।”
পাশাপাশি, মার্কার একটি ইংরেজি সংবাদপত্রকে বলেছেন যে, আশা বন থেকে এসেছে। এই কারণেই তার গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি তাই হয়, তাহলে আরও সতর্ক হওয়া দরকার। এছাড়াও, ওই প্রকল্পের জন্য আরও প্রশিক্ষিত কর্মীদের প্রয়োজন হবে। চিতাটির মানসিক চাপ কমাতে জায়গাটি শান্ত রাখা উচিত। যাতে সে তার সন্তানদের প্রতি মনোযোগ দিতে পারে। পাশাপাশি, আশা সন্তানের জন্ম দিলে তা ভারতের জন্য নামিবিয়ার আরেকটি উপহার হিসেবে বিবেচিত হবে বলেও জানান তিনি।
নাম দিয়েছিলেন মোদী: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত ১৭ সেপ্টেম্বর তাঁর জন্মদিনে নামিবিয়া থেকে নিয়ে আসা আটটি চিতাকে কুনো জাতীয় উদ্যানে ছেড়ে দেন। চিতাগুলিকে বর্তমানে একটি ছোট ঘেরা জায়গায় রাখা হয়েছে। সেখানে পাঁচটি মহিলা ও তিনটি পুরুষ চিতা রয়েছে। এখনও পর্যন্ত চিতাগুলি ইতিবাচক লক্ষণ প্রকাশ করছে বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, কুনোর পরিবেশও তাদের ভালো লাগতে শুরু করেছে। দেরাদুনের WII এবং মধ্যপ্রদেশ বন বিভাগের কর্মচারীরা তাদের দেখাশোনা করছেন।
গর্ভাবস্থার লক্ষণ আছে: এই প্রসঙ্গে বন বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আশার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ রয়েছে। তবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আরও কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে বলেও জানান তিনি। উল্লেখ্য যে, গর্ভাবস্থা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য চিতাদের ক্ষেত্রে সাধারণত ৫৫ দিন অপেক্ষা করতে হয়। এমতাবস্থায়, প্রজেক্ট চিতা-র অধীনে এটাই হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এখনও পর্যন্ত দেখা গেছে চিতার বাচ্চাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা মাত্র দশ শতাংশ। এদিকে, জাতীয় উদ্যান বা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের মত সংরক্ষিত এলাকায় এই চ্যালেঞ্জ আরও বেড়ে যায়।
জন্মের সময় অন্ধ থাকে শাবক: জন্মের সময় চিতার শাবকের ওজন ২৪০ থেকে ৪২৫ গ্রাম হয়। এমনকি, সেইসময়ে তারা দেখতেও পায় না। এদিকে, জন্মের এক বা দু’দিন পর, মা চিতা শিকারে যাওয়ার সময়ে তার শাবকগুলিকে গর্তে লুকিয়ে রাখে। আর এটাই হয় শাবকগুলির জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক সময়। পাশাপাশি, শাবকদের ছয় থেকে আট সপ্তাহ পর্যন্ত গর্তে লুকিয়ে রাখে মা চিতা।