বাংলাহান্ট ডেস্ক: দু বছর পরে দূর্গাপুজোর কার্নিভ্যাল (Durgapuja Carnival) হচ্ছে রেড রোডে। অন্যদিকে কিছুদিন আগেই প্রতিমা নিরঞ্জনের সময়ে হড়পা বানে আটজন হতভাগ্যের সলিল সমাধি ঘটেছে। এহেন মর্মান্তিক দুর্ঘটনার মধ্যে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা কতটা যুক্তিযুক্ত? প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী শিবির। এবার খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থকের কণ্ঠেই শোনা গেল একই সুর। মুখ্যমন্ত্রীকে কার্নিভ্যাল বন্ধ রাখার আবেদন জানান কবীর সুমন (Kabir Suman)।
তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ হলেও এখনো তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই সমর্থন করেন, একথা অজানা নয় কারোরই। রাজ্য সরকারের সমর্থনে একাধিক বার সুর চড়িয়েছেন সঙ্গীতশিল্পী। কিন্তু মালবাজারের ঘটনা তাঁর হৃদয়কেও নাড়া দিয়ে গিয়েছে। কার্নিভ্যাল হওয়ার ব্যাপারটা তিনিও যেন সমর্থন করতে পারছেন না।
শনিবার সকালে ফেসবুকে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্ধেশে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন কবীর সুমন। তিনি লিখেছেন, ‘মাননীয়া, আমি তোমার বিরোধী নই। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে এই রাজ্যে যে জনহিতকর কাজগুলি তুমি করেছ, করে চলেছ সেগুলির তুলনা নেই।
আজ আমার একটি অনুরোধ: মালবাজারে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আমাদের সহনাগরিকদের যে আকস্মিক প্রাণহানি ঘটল তা মনে রেখে তুমি অনুগ্রহ করে আজকের কার্নিভাল বাতিল করে দাও। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তোমার কোনটা করণীয় কোনটা করণীয় নয় তা বলে দেবার আমি কে? তিয়াত্তরে চলতে থাকা তোমার এক সহনাগরিক হিসেবে আমি তোমায় অনুরোধ করতে পারি মাত্র।’
নিজেকে সহনাগরিক বলে তিনি আরো লিখেছেন, ‘সনির্বন্ধ অনুরোধ: মাননীয়া, মালবাজারের অকালমৃত ও তাঁদের শোকবিহ্বল পরিবারবর্গের কথা ভেবে তুমি আজকের কার্নিভাল বন্ধ রাখো। মাননীয়া, আমি সেই লোকটা যে – তোমার আজকের ভক্ত স্তাবকরা যখন তোমার থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখছিল – নিজের টিভি অনুষ্ঠান- সঞ্চালকের চাকরির তোয়াক্কা না করে তোমার অনশন মঞ্চে ছুটে গিয়েছিল, তোমার পক্ষ নিয়েছিল। এক পাও নড়েনি।
মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা, আজ মহাশ্বেতা দেবী থাকলে আমার ধারণা একই অনুরোধ জানাতেন। অনুগ্রহ করে কলকাতার কার্নিভাল এ বছরের মতো বন্ধ করে দাও। সামনের বছর না হয় আবার হবে।’
মুখ খুলেছেন পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ও। বামেদের বইয়ের দোকান ভাঙচুরের অভিযোগে প্রতিবাদ করায় অষ্টমীর সন্ধ্যায় গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পরিচালকের কণ্ঠকে দমানো যায়নি। তিনি লিখেছেন, ‘এতো মানুষ বানভাসি- নিখোঁজ ও মৃত। তারপরেও খুশির কার্নিভাল কতটা জরুরি?’ যদিও সমালোচনা কটাক্ষ কার্নিভ্যাল বন্ধ করতে পারেনি। বিশিষ্ট জন এবং ইউনেস্কোর প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় অংশ নেয় শতাধিক পুজো কমিটি।