বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ‘আধুনিক বোমা এখনো তৈরি হয়নি রয়ে গিয়েছে ষাটের দশকের বোমা’, বিতর্কিত মন্তব্য করে বসলেন তৃণমূল (Trinamool Congres সাংসদ সৌগত রায় (Sougata Roy)। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পূর্বে সৌগতবাবুর এহেন বক্তব্য ইতিমধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে গোটা বাংলায়। বিভিন্ন প্রান্তে বোমা উদ্ধারের যে সকল ঘটনা ঘটে চলেছে, সেই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে তাঁর এই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে আক্রমণ শানিয়ে চলেছে বিরোধী দলগুলি।
পঞ্চায়েত নির্বাচন আসন্ন। তার পূর্বে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে, বিশেষত ভাটপাড়া এলাকায় যেভাবে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা বেড়েই চলেছে, তা কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে সরগরম হয়ে উঠেছে বঙ্গ রাজনীতি। সম্প্রতি ভাটপাড়ায় বল ভেবে খেলতে গিয়ে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রাণ চায় এক শিশুর। এছাড়াও অন্যান্য একাধিক জায়গাতেও বোমা উদ্ধারের ঘটনা বেড়ে চলেছে আর এই মুহূর্তে সৌগতবাবুর মন্তব্য ঘিরে উঠে গিয়েছে বিতর্কের ঝড়।
এদিন সৌগত রায় বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে কি এর আগে বোমা পড়তো না? সিপিএম বা কংগ্রেসের আমলে পাওয়া যেত না? মুশকিল হল, এখন বিজ্ঞানের অগ্রগতি ঘটলেও ষাটের দশকে যে বোমা দেখেছি, এখনো সেগুলি রয়ে গিয়েছে। কৌটার ভেতর নারকেলের দড়ি পেঁচিয়ে আর্সেনিক ট্রাই সালফাইড, পটাস এবং পটাশিয়াম ক্লোরেট দিয়ে বোমা বানানো হয়। এক্ষেত্রে আধুনিকভাবে বোমা তৈরি হচ্ছে না।”
সৌগত রায়ের এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “বোমা তৈরি করার যে ফর্মুলা, সে ব্যাপারে খুব এক্সপার্ট সৌগত রায়। কিভাবে তৈরি করতে হয় কিংবা আগে এবং পরে কি হচ্ছে, তা সবকিছুই ওঁনার জানা। আগে জানতাম হাতে টাকা নেওয়ার ব্যাপারে সকলে এক্সপার্ট। এখন দেখছি, বোমা তৈরি করার ফর্মুলাও জানেন উনি। তাঁর এই কথা গুলি বোমা উদ্ধার এবং মৃত্যুর ঘটনাকে প্রশ্রয় দিয়ে চলেছে।”
অপরদিকে, বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “অতীতে ইংরেজদের ওপর হামলা করার জন্য বাংলার বিপ্লবীরা বোমা বানাত আর এখন ভোটে সন্ত্রাস এবং গ্রামের মানুষকে ভয় দেখানোর জন্য ঘরে ঘরে বোমা পাওয়া যাচ্ছে। ওঁনার (সৌগত রায়) মতো একজন অধ্যাপক এবং সাংসদের থেকে বোমা বানানোর ফর্মুলা শিখছে বাংলার যুবক। পরবর্তী সময়ে দুয়ারে বোমা প্রকল্প শুরু হবে বলে মনে হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওঁকে আর টিকিট দেবে না। তাই আমার মনে হয়, ওর যদি এতই জ্ঞান থাকে বোমা তৈরির ব্যাপারে, তাহলে এনআইএ-তে চাকরি দেওয়া উচিত।”
প্রসঙ্গত, এদিন কামারহাটিতে বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, “সময়ে এসে গিয়েছে; যারা আর্থিক সুবিধার জন্য দলে রয়েছেন, তাদের সরে যাওয়ার সময় এসেছে। কারণ, আমাদের ৯৫ শতাংশ কর্মী সৎভাবে কাজ করে চলেছেন। তাই কয়েকজন মানুষ যারা ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য রয়েছে, তাদের জন্য দলের ভাবমূর্তি খারাপ হোক, সেটা চাই না।”