বাংলাহান্ট ডেস্ক : মধ্যপ্রদেশের রাজগড় জেলা থেকে আরও ৫০ কিলোমিটার ভিতরে এক গ্রাম টুটিয়াহেড়ী। সেখানে শিক্ষকতা করতে গিয়ে মনখারাপ হয়ে যায় সরকারী শিক্ষক ওমপ্রকাশের। যে শিক্ষাঙ্গনে তিনি কাজ করতে এসেছেন, তার এতো খারাপ অবস্থা হতে পারে তিনি চিন্তাও করতে পারেননি।
বিদ্যালয়ে প্রয়োজনীয় কিছুই নেই বললেই চলে। ক্লাসরুম গুলোর রং চটে গিয়ে সিমেন্ট বালি খসে পড়ছে। বিদ্যুৎ তো নেইই, এমনকী বসার টেবিল চেয়ারেরও অভাব বিদ্যালয়টিতে। বিদ্যালয়ে ছাত্র ছাত্রীদের শেখানো হয় কীভাবে তারা জীবনের পথে উন্নতি করবে বা এগিয়ে যাবে, এমন পরিস্থিতিতে তারা কীভাবে পড়াশোনা করবে, এটাই ভাবিয়ে তুলেছিল ওমপ্রকাশকে। তাই তিনি নিজের চেষ্টাতেই বিদ্যালয়ের পরিবেশ এবং অবস্থা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন।
তিনি খেয়াল করে দেখেন বিদ্যালয়টিতে ছাত্র সংখ্যা খুবই কম। আর তার কারণ বিদ্যালয়ে ভালোভাবে পড়াশোনার সুযোগ পাওয়া যায় না। একে তো বিদ্যালয়ের অবস্থা খারাপ, তার ওপর সরকারী বিদ্যালয় হওয়ায় পঠন-পাঠনের সুযোগ কম। তাই বাবা- মায়েরা ইচ্ছে করেই তাঁদের ছেলে মেয়েকে প্রাইভেট স্কুলগুলিতে ভর্তি করান। কিন্তু এসব শুনে ওমপ্রকাশ চুপ করে বসে থাকার পাত্র ছিলেন না। নিজ উদ্যোগে বিদ্যালয়ে জল ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেন। এছাড়াও জোগাড় করেন চেয়ার ও টেবিল।
এরপর জন সাধারণদের মধ্যে গিয়ে বোঝাতে শুরু করেন সরকারী স্কুলের প্রয়োজনীয়তা। এর জন্য তাঁকে অনেক কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়েছে। কিন্তু তিনি থেমে থাকেননি। খরচ হয়ে গেছে বেশ কয়েক মাসের মাইনেও, কিন্তু তিনি এসবের পরোয়া না করে এগিয়ে গেছেন নিজের লক্ষ্যে। আগের থেকে ছাত্র সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে বিদ্যালয়টিতে। তিনি আশাবাদী আগামীতে আরও ছাত্র নিশ্চয়ই ভর্তি হবে এই বিদ্যালয়ে। তাঁর এই উদ্যোগকে সম্মান জানিয়ে জেলা প্রশাসন থেকে তাঁকে পুরস্কৃত করা হয়।