বাংলাহান্ট ডেস্ক : বঙ্গ রাজনীতিতে আজ যেটা ঘটল তা বিরলতম বললেও কম বলা হয়। বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) ঘরে নাকি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী! জানা যাচ্ছে শুক্রবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ডাক পেয়ে তাঁর ঘরে যান শুভেন্দু (Suvendu Adhikari)। অবশ্য তিনি একা নন। সঙ্গে ছিলেন পরিষদীয় দলনেতা মনোজ টিগ্গা, বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল, অশোক লাহিড়ি। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সামান্য আলোচনার পরই বেরিয়ে আসেন তাঁরা। ২০২১ সালে তৃতীয় তৃণমূল সরকার গঠনের পর এই প্রথম রাজ্যের আইনসভার ভিতর মুখোমুখি হলেন মুখ্যমন্ত্রী ও বিরোধী দলনেতা।
শুক্রবার ‘সংবিধান দিবস’ পালিত হচ্ছে বিধানসভায় (Assmbly)। পাশাপাশি নতুন ভবনের উদ্বোধনও চলছে। কিন্তু সেই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রে নাম নেই বিরোধী দলনেতার, এই অভিযোগ তুলে তিনি অনুষ্ঠান বয়কট করেছেন। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে নিজের ঘরে ডেকে পাঠান। জানা যাচ্ছে ‘সংবিধান দিবসে’র অনুষ্ঠানে একসঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা বলেন। এক মিনিট সেখানে ছিলেন শুভেন্দু, মনোজ টিগ্গা, অগ্নিমিত্রারা। পরে বেরিয়ে এসে বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘ওঁর ঘরে ডেকেছিলেন। সৌজন্য বিনিময় হল। যদিও চা খাওয়া আর হয়নি।’ অগ্নিমিত্রা জানান, ‘সিএম বসেছিলেন, সৌজন্য বিনিময় করলাম।’ অপর দিকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘চা খেতে ডেকেছিলাম।’
তার আগে বিধানসভা কক্ষে এদিন বিরোধীদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে শুভেন্দুর নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যাঁকে আমি ভাইয়ের মতো স্নেহ করতাম একসময়ে, তিনি বলছেন, আমাদের সরকার নাকি বাই দ্য পার্টি, অফ দ্য পার্টি, ফর দ্য পার্টি। আর তাহলে দিল্লির সরকারটা কী? বাই দ্য এজেন্সি, অফ দ্য এজেন্সি, ফর দ্য এজেন্সি? আমাদের সরকার মানুষের সরকার। তৃণমূল যখন তৈরি হয়, তখন ছিলেন না আপনি। শিশিরদা কংগ্রেসে ছিলেন, তৃণমূলে ছিলেন অখিল গিরি। আমি শিশিরদাকে সম্মান করি। বিরোধীদের সম্মান করি। হাউজ চলছে, সবাইকে বলার সুযোগ দিন।’
এদিন কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে বিধানসভার অন্দরে আবারও সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘স্পিকারকে বলব, সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল তৈরি করুন। সব দলের প্রতিনিধিরা থাকবে। তাঁরা দিল্লি গিয়ে মন্ত্রীদের কাছে বাংলার হয়ে দাবি করবে। প্রধানমন্ত্রীর কাছেও দাবি করুক, সবাই মিলে উন্নয়নের কাজ করুন।’
আজ শুক্রবার বিধানসভার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা মমতা-শুভেন্দুর সাক্ষাৎ। তৃতীয়বার তৃণমূল সরকার গঠন, শুভেন্দুর বিরোধী দলনেতা হওয়ার পর এই প্রথম একে অপরের সঙ্গে দেখা করে সৌজন্য বিনিময় করলেন। এর আগে রাজ্যপালের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানেও গড়হাজির ছিলেন বিরোধী দলনেতা। তবে এবার মুখ্যমন্ত্রীর ডাকে হাসিমুখে তাঁর ঘরে গিয়ে দেখা করে এলেন বলেই জানা যাচ্ছে।