খরচ মাত্র ১০ হাজার টাকা! পরিত্যক্ত জিনিস দিয়ে আস্ত গাড়ি বানিয়ে তাক লাগলেন নদিয়ার শ্রমিক

বাংলা হান্ট ডেস্ক: গাড়িতে চড়তে কে না ভালোবাসেন? এমনকি, প্রত্যেকেই চান যে তাঁর নিজের একটা গাড়ি থাকুক। তবে, গাড়ির দামের কারণে অনেকরই সেই শখ পূরণ হয় না। কিন্তু, এবার এক অসাধ্য সাধন করে দেখালেন নদীয়ার (Nadia) সঞ্জয় প্রামাণিক। যিনি মাত্র দশ হাজার টাকার খরচেই তৈরি করে ফেলেছেন আস্ত এক গাড়ি। হ্যাঁ, প্রথমে শুনে অবিশ্বাস্য মনে হলেও এবার ঠিক এই অসম্ভবকেই সম্ভব করে দেখিয়েছেন তিনি। বর্তমান প্রতিবেদনে সেই প্রসঙ্গটি উপস্থাপিত করা হল।

জানা গিয়েছে, নদীয়ার শান্তিপুরের বৈষ্ণব পাড়ার বাসিন্দা সঞ্জয় প্রামাণিকের তৈরি করা ওই গাড়িটিতে একটি সাধারণ গাড়িতে যা যা থাকে তা সবকিছুই উপলব্ধ রয়েছে। হেডলাইট থেকে শুরু করে ইন্ডিকেটর, হর্ন, গান শোনার ব্যবস্থা, জলের বোতল রাখার জায়গা এমনকি, গাড়িকে পিছিয়ে নেওয়ার জন্য ব্যাক গিয়ারের ব্যবস্থাও রয়েছে ওই গাড়িতে। আর এত কিছুর সুবিধা তিনি মাত্র ১০ হাজার টাকার মধ্যেই ব্যবস্থা করে ফেলেছেন। তবে, ব্যাটারি এবং মোটরের দাম অবশ্য ওই দামের মধ্যে ধরা নেই। কারণ, এগুলি প্রয়োজনীয় ক্ষমতা এবং সামর্থ্যের বিচারে সঞ্জয় লাগিয়ে দেন।

এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, অবিবাহিত সঞ্জয়বাবু কিন্তু কোনো ইঞ্জিনিয়ার নন। বরং পেশাগতভাবে তিনি একজন মন্ডপ সজ্জার শ্রমিক। যদিও, তিনি বিভিন্ন সৃজনশীল কাজের মধ্যে সবসময় যুক্ত থাকতে পছন্দ করেন। এমতাবস্থায় অভাবের সংসারে লকডাউন চলাকালীন ছোট ভাইপোর বায়না সামলাতে গিয়ে বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় তথা পরিত্যক্ত জিনিসপত্র দিয়ে তিনি বানিয়ে ফেলেছিলেন একটি গাড়ি। যদিও, সেই গাড়িটিতে শুধুমাত্র চালকের আসনই ছিল।

কিন্তু, এবার সেই গাড়িটিরই পরবর্তী সংস্করণ তৈরি করেছেন তিনি। পাশাপাশি, বেড়েছে আসন সংখ্যাও। এবার তাঁর এই গাড়িটিতে দু’জন বসতে পারবেন। এমতাবস্থায়, গাড়ির প্রতিটি অংশই তৈরি করা হয়েছে পরিত্যক্ত জিনিসপত্র দিয়েই। শুধু তাই নয়, তিনি যখন তাঁর এই অভিনব গাড়িটি নিয়ে রাস্তায় ট্রায়ালে বেরোন তখন সকলেই প্রবল আগ্রহে গাড়িটির দিকে তাকিয়ে থাকেন। এমনক, পথচারীরা সেলফিও তোলেন সঞ্জয়বাবুর সাথে।

WhatsApp Image 2022 11 27 at 1.50.59 PM

এই প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, এবারের গাড়িটি এক বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন কলেজ পড়ুয়ার অর্ডার অনুযায়ী বানানো হয়েছে। আর সেইজন্যই তিনি নিজে ট্রায়াল দিয়ে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। তারপরেই গাড়িটি তিনি ওই পড়ুয়ার হাতে তুলে দেবেন। এছাড়াও, শারিরীকভাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পাশাপাশি বয়স্ক মানুষ এমনকি গৃহবধূরাও খুব সহজেই এই গাড়িটি চালাতে পারবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর