বাংলাহান্ট ডেস্ক : ইংরেজি সাহিত্যে মাস্টার্স করেছিলেন, এমনকি উত্তীর্ণ হয়েছিলেন বিএডেও। স্বপ্ন ছিল শিক্ষকতা করবেন। তারপর আর কী! এসএসসি’র ওয়েটিং লিস্টে নাম উঠায় দ্বারস্থ হয়েছিলেন ঘাসফুলের শিবিরের এক নেতার কাছে। কিন্তু তারপরে সেখানে মোটা টাকার ঘুষ দিয়েও চাকরি মিললো না যুবকের। আর সেই তীব্র মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করলেন তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানার সুপার বুরালি গ্রামে।
জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের নাম তপন দোলই। বয়স ২৮। তাঁর পরিবারের তরফে বলা হয় যে, তপনের নাম ওয়েটিং লিস্টে চলে আসার পর তিনি ৫ লাখ টাকা লোন নেন একটি ব্যাঙ্ক থেকে। শেষ পর্যন্ত চার বছর আগে কেশপুরের বিশ্বনাথপুরের এক এজেন্ট-কে সেই টাকা দেন। তারপরেও তপন সেই চাকরি থেকে বঞ্চিত হন। এসবের পর থেকেই তিনি অবসাদে চলে যান। চাষের সঙ্গে সঙ্গে ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পড়ানোও শুরু করেন তিনি। মাথার উপর বিপুল অঙ্কের দেনা তো আর কম কথা নয়।
তাই শেষপর্যন্ত চাকরিলাভের আশা দেখতে না পেয়ে তিনি সেই এজেন্টের সাথে যোগাযোগ করেন এবং তাঁর কাছেই সরাসরি সেই টাকা চেয়ে বসেন। কিন্তু সেই এজেন্ট বেমালুম সেই টাকার কথা অস্বীকার করে যান। আর এদিকে মাথার উপর ঋণের বোঝা বাড়তে থাকায় তিনি আর মানসিক চাপ নিতে পারেননি। তীব্র অবসাদে ডুবে গিয়ে তপন এইরকম এক ভয়াবহ সিদ্ধান্ত নেন।
তাঁর দিদি বিজলী জানান যে তিনি একদমই বুঝতে পারেননি তাঁর ছোটভাই এইরকম করে বসবেন। তপনের দাদা সুকুমার বলেন যে, গত বৃহস্পতিবার রাতেও সবার সাথে যেমন মিলে মিশে খাওয়া দাওয়া করেন, সেইরকমই খাওয়া শেষ করে রাতে শুতে যান। আর এর মধ্যেই কোনও এক ফাঁকে বিষ খেয়ে নেন তপন। ওইদিন রাতেই তপনের শরীর খুব খারাপ হওয়ায় পরিবারের লোকজন তাঁকে পাশের হাসপাতালে ভর্তি করেন। কিন্তু, শেষ রক্ষা হয়নি। শনিবার রাতে তিনি মারা যান।