১০ বছরে বিয়ে, খরচ চালাতে ২ বাচ্চার মা করেন জিমে চাকরি! এবার স্বর্ণপদক জিতে দেশকে করলেন গর্বিত

বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: সদ্য থাইল্যান্ডের পাটায়াতে ১৭ এবং ১৮ই ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছিল মহিলাদের ৩৯তম দেহ সৌষ্ঠব প্রতিযোগিতা। বিশ্বের বহু প্রান্তের মহিলা প্রতিযোগিরা এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ন ছিল এই টুর্নামেন্টটি। কিন্তু যাবতীয় প্রতিদ্বন্দ্বীকে পেছনে ফেলে এই প্রতিযোগিতাটি জিতে ভারতের মুখ উজ্জ্বল করেছেন রাজস্থানের প্রথম মহিলা বডি বিল্ডার প্রিয়া সিং।

যদিও প্রিয়ার পক্ষে এই উচ্চতায় পৌঁছনো একেবারেই সহজ ছিল না। অনেক প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে এই জায়গায় উঠে এসেছেন তিনি। বিকানেরের দলিত পরিবারে জন্ম নেওয়া কন্যা এমন একটি ক্ষেত্রে এই মানের সাফল্য অর্জন করবেন, সেটা কল্পনা করাও কিছুটা কঠিন। কিন্তু সেই অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছেন তিনি।

প্রিয়ার যখন ১০ বছর বয়স ছিল, তখনই তার পরিবার তাকে বাল্য বধূ হিসাবে বিবাহ করিয়ে দেয়। সেখান থেকে পরিবারের সকলের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই নিজের লক্ষ্যকে ছোঁয়ার দৌড় শুরু করেছিলেন প্রিয়া। সমাজের সামনে নিজের দৃঢ়তার পরীক্ষা দিতে হয় তাকে। এক্ষেত্রে তাকে ভাগ্যও কিছুটা সাহায্য করে।

প্রিয়া সিং বিয়ের কয়েকবছর পরে দুই সন্তানের মা হন। সেই সময় তার পরিবার আর্থিক সংকটের মধ্যে দিয়ে চলছিল। এই অবস্থায় প্রিয়া জিমে চাকরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তার পরিবার এই ব্যাপারে মত দিতে বাধ্য হন। সংসার ও কর্মজীবনে ভারসাম্য বজায় রাখার কাজটা সহজ ছিল না, কিন্তু এই ব্যাপারে তাকে অনেকটা সাহায্য করেছিলেন তার স্বামী। জিমে কাজ করতেই নিজেও শরীরচর্চা শুরু করেন তিনি এবং দেহ সৌষ্ঠব প্রতিযোগিতার বিষয়ে অবগত হন।

এভাবে নিজের অনুশীলন চালাতে চালাতে তিনি পরিণত হন রাজস্থানের প্রথম মহিলা বডি বিল্ডারে। রাজ্য স্তরে তিনবার সোনা জয়ের কৃতিত্বও অর্জন করেন তিনি। এবার আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাফল্য পেয়ে যখন বাড়ি ফিরছিলেন প্রিয়া, তখন অনেক বেশি সমাদরের প্রত্যাশা করেছিলেন তিনি। তবে জয়পুর বিমানবন্দরে পৌঁছে তাকে সেই নিয়ে কিছুটা হতাশ হতে হয়। তবে পরিবারের লোকেদের উষ্ণ অভ্যর্থনা তার সেই দুঃখ ঘুচিয়ে দিয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।


Reetabrata Deb

সম্পর্কিত খবর