বাংলাহান্ট ডেস্ক: সংষ্কৃতি ও বিনোদন জগতের সদস্যদের উপরে বারংবার শারীরিক এবং মানসিক নিগ্রহের খবর উঠে এসেছে। বিজেপির (Bharatiya Janata Party) সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের ‘রগড়ে দেব’ মন্তব্য থেকে শুরু করে নাট্যকর্মী অমিত সাহা এবং অরূপ খাঁড়ার উপরে তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতার হেনস্থার সাম্প্রতিকতম অভিযোগ। বারেবারে সাংষ্কৃতিক জগতের সদস্যদের নিরাপত্তা এবং সম্মানের প্রশ্ন উঠছে। এবার রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ উগরে দিলেন অভিনেতা পরিচালক অনির্বাণ ভট্টাচার্য (Anirban Bhattacharya)।
কিছুদিন আগেই দুই নাট্যকর্মীকে বেলেঘাটায় মারধোর করার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের এক নেতা এবং তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। গত ১৮ ডিসেম্বর এ বিষয়ে একটি প্রতিবাদ সভা ডাকা হয়েছিল। দীর্ঘদিনের থিয়েটার কর্মী অনির্বাণ সশরীরে সেই সভায় উপস্থিত থাকতে না পারলেও একটি লিখিত বার্তা পাঠিয়েছিলেন।
শ্লেষ মিশিয়ে অনির্বাণ লিখেছেন, নাট্যকর্মীদের মারধোরের নেতৃত্ব দেওয়া তৃণমূল নেতা হয়তো কালের নিয়মে একদিন বাংলার সংষ্কৃতি মন্ত্রী হয়ে যেতে পারেন। বা দল বদলালে হয়তো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও হতে পারেন। অনির্বাণ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, যাঁর গায়ে হাত উঠেছে তাঁর গায়ে আবারো হাত উঠতে পারে। আর যিনি হাত তুলেছেন তিনি আরো সাহস পেয়ে যেতে পারেন।
সপ্তাহ খানেক আগে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের মঞ্চে অমিতাভ বচ্চন এবং শাহরুখ খানের চর্চিত বক্তৃতার প্রসঙ্গও টেনেছেন অনির্বাণ। বাক স্বাধীনতার উপরে হস্তক্ষেপের তীব্র নিন্দা করেছিলেন বিগ বি। অন্যদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দুকদের সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছিলেন শাহরুখ।
বিবৃতিতে অনির্বাণের কটাক্ষ, দুই তারকার বক্তৃতা শুনে সেদিন মঞ্চে বসে থাকা অনেকেই হাততালি দিয়েছিলেন। অথচ তার কয়েকদিন পরেই এই রাজ্যেই নাট্য উৎসব আয়োজনের ‘অপরাধে’ নিগৃহীত হলেন অমিত সাহা এবং অরূপ খাঁড়া। কারণটাও জানিয়ে দিয়েছেন অনির্বাণ। তাঁর মতে, এই দুই নাট্যকর্মী অমিতাভ শাহরুখের মতো বাংলার একটি ভোটও ‘ডিস্টার্ব’ বা ‘পেট্রনাইজ’ করতে পারেন না। তাই মার খেতে হল তাঁদের।
এর আগে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন অনির্বাণ। এবারে শুধু তৃণমূল নয়, বাম জমানায় ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা নিয়েও পরোক্ষে মন্তব্য করেন তিনি। অর্পিতা ঘোষের নাটক মঞ্চস্থ করায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল হুগলির সিপিএম নেতার বিরুদ্ধে। এদিন অনির্বাণ বলেন, অতীতেও নিশ্চয়ই নাট্যকর্মীদের গায়ে হাত উঠেছে। তবে তাঁর জানার মধ্যে সাম্প্রতিক কালে এই ঘটনাই ঘটেছে। তাই কোনো লাভ হবে না জেনেও প্রতিবাদ করছেন অনির্বাণ।