বাংলা হান্ট ডেস্ক: আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রী পরিষেবা শুরুর পরই পরপর দু’দিন পাথর ছোঁড়া হয় বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের (Vande Bharat Express) উদ্দেশ্যে। যা নিয়ে পরবর্তীকালে শুরু হয়ে যায় রাজনৈতিক তরজা। এমনকি, বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে পাথর ছোঁড়ার ঘটনার তদন্তভার এনআইএ-কে দেওয়ার দাবি তুলেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। ঠিক সেই আবহেই এবার পাথর ছোঁড়ার ঘটনার ভিডিওটি প্রকাশ্যে এল।
ইতিমধ্যেই পূর্ব রেলের তরফে ওই ফুটেজ প্রকাশ করে জানানো হয়েছে যে, বন্দে ভারতে পাথর ছোঁড়ার ঘটনা যখন ঘটে, তখন এই ট্রেনটি বিহারের ওপর দিয়ে যাচ্ছিল। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে চারজনকে শনাক্ত করে পাকড়াও করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, হামলাকারীদের প্রত্যেকেই নাবালক। পাশাপাশি, তাদের প্রত্যেকেরই পরিবারের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। নিমল নামে একটি গ্রামের বাসিন্দা ওই চার নাবালক। এদিকে, সরকারি সম্পত্তি নষ্টের অভিযোগ আনা হয়েছে ওই ৪ জনের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি বৃহস্পতিবারই তাদের পাকড়াও করার পর জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে রেল পুলিশ।
তবে, ওই জিজ্ঞাসাবাদে অবাক করা তথ্য জানিয়েছে তারা। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে নাবালকরা জানিয়েছে, এর আগেও তারা বিভিন্ন ট্রেনে কয়েকজনকে এরকমই পাথর ছুঁড়তে দেখেছিল। আর সেই কারণেই নিছক মজা করার উদ্দেশ্যে তারা পাথর ছুঁড়ে দেয় বন্দে ভারতের উদ্দেশ্যে। এমতাবস্থায়, পুলিশ সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে যে, সকলেরই বক্তব্য সঠিকভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি, পাথর ছোঁড়ার পিছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে কি না সেটিও যাচাই করা হচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী জানিয়েছেন, “এই ঘটনায় যেটা বোঝা যাচ্ছে কিষাণগঞ্জ জেলায় বাংলা-বিহারের সীমানায় মাঙ্গুরজান নামে কোনো জায়গা আছে। ওইখানেই ঘটনাটা ঘটেছে বলেই ফুটেজ দেখে বোঝা যাচ্ছে। যারা পাথর ছুঁড়েছে তাদের ধরে ফেলা অসম্ভব হবে না। কারণ, ট্রেনে ক্যামেরা লাগানো আছে।” এছাড়াও, তিনি আরও জানান, “এই ধরণের ঘটনা শুধু অপরাধ হয়, পাশাপাশি, নির্বুদ্ধিতারও পরিচয় দেয়। আমরা ইতিমধ্যেই সাধারণের মানুষের কাউন্সেলিং করছি, আরপিএফও করছে।” এদিকে, ইতিমধ্যেই এই ঘটনা বিহারে ঘটেছে জানার পর পাল্টা প্রত্যুত্তর দিচ্ছে রাজ্যের শাসক দল।
যদিও, একলব্য চক্রবর্তীর মতে, “আমাদের কাছে বাংলা বিহার বলে কোনো ভাগ নেই। পূর্ব রেলের মধ্যে বাংলা, বিহার, ঝাড়খণ্ড সবই আছে। তাই যেখান থেকেই অপরাধ হোক, যেই অপরাধী হোক, আইন মেনে তার শাস্তি হবেই।” উল্লেখ্য যে, ইতিমধ্যেই রেলের তরফে যে স্টেশন দিয়ে বন্দে ভারত যাবে সেই সমস্ত স্টেশনে বিশেষ ঘোষণার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মূলত, বিশেষ এই ঘোষণায় মানুষকে সচেতন করাই মূল লক্ষ্য থাকবে। পাশাপাশি, বন্দে ভারতের নিরাপত্তাও আরও জোরদার করা হচ্ছে।