কারা এজলাসে ঢুকতে বাধা দেন বিচারপতিকে? এবার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শুরু শনাক্তকরণ পক্রিয়া

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিগত কিছুদিন ধরে উত্তপ্ত হাইকোর্ট চত্বর। গত সোমবার সকাল থেকে কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি রাজশেখর মান্থার (Justice Rajasekhar Mantha) এজলাসে গেট আটকে বিক্ষোভে (Agitation) নামেন আইনজীবীদের একাংশ। ঘটনার জল গড়ায় বহুদূর পর্যন্ত। মঙ্গলবার এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আদলত অবমাননার রুল জারি করেন বিচারপতি মান্থা। এবার এজলাস ঘটনায় আরও কড়া নির্দেশ দিলেন বিচারপতি।

কী জানা যাচ্ছে? সূত্রের খবর, সেদিন যারা এজলাসের বাইরে বিচারপতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তাঁদের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে শনাক্তকরণ পক্রিয়া শুরু করল আদালত। আর এই নির্দেশ জারি করেন খোদ বিচারপতি মান্থা। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নির্দেশ, এজলাসের বাইরের সিসিটিভি দেখে সেই সব ব্যক্তি এবং আইনজীবীদের অতিসত্তর শনাক্ত করতে হবে।

প্রসঙ্গত, পূর্বে বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, কোনো অবস্থাতেই তাঁরা সেই অবস্থানকারীদের পাশে নেই। অন্যদিকে সোমবারের নজিরবিহীন এই ঘটনার প্রতিবাদে বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার দ্বারস্থ ‘লইয়ার্স ফর জাস্টিস’ নামে আইনজীবী সংগঠন। তাঁদের অভিযোগ, এই ঘটনার আড়ালে যাঁরা রয়েছে তাঁরা আইনজীবীদের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। অবশ্যই তাঁদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন।

উল্লেখ্য সোমবারের এজলাসের ঘটনার পর বিচারপতি মান্থার বিরুদ্ধে আদালতের বাইরের দেওয়ালে দেখা যায় কুরুচিকর পোস্টার। যেইসব পোস্টারে বিচারপতি ছবি দিয়ে ইংরাজিতে লেখা ছিল -“লজ্জা, বিচারব্যবস্থার নামে কলঙ্ক! কোথায় আসল বিচার মিলবে?” শুধু তাই নয়, আদালত চত্বর ছাড়িয়ে এই ক্ষোভ পৌঁছে যায় বিচারপতির যোধপুর পার্কে তাঁর বাসভবন ও সংলগ্ন এলাকাতেও। সেখানেও একাধিক জায়গায় বিচারপতির বিরুদ্ধে পোস্টার দেখা যায়।

এরপর মঙ্গলবার সকালে আদালত খোলার পরও আইনজীবীদের একাংশ সেই বিক্ষোভে অনড় থাকে। পাশাপাশি অন্য আইনজীবীদের তাঁর এজলাসে যেতে বাধা দেওয়ার মত গুরুতর অভিযোগ উঠে আসে। এরপর রাজ্যের এজির কাছে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা অভিযোগ প্রশ্ন করেন, “রাজ্যের আইনজীবীরা আসছেন না কেন?” জবাবে এজি সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমি কথা বলেছি। তাঁরা চায় মামলায় অংশ নিতে। বারের বেশিরভাগ আইনজীবীরা যোগদানের পক্ষে। আমি একা, সব মামলায় তো একা অংশগ্রহণ করতে পারি না। তবে তারা মামলায় অংশগ্রহণের পক্ষে।”

high courtt

বিচারপতির সংযোজন, “অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি ছিল। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলা আমি স্থগিত রেখেছি। কিন্তু সরকারি আইনজীবী অনুপস্থিত থাকার জন্য মামলায় কোন নির্দেশ দিতে পারলাম না। বিচারপ্রার্থীদের কথা ভাবতে হবে। দেখা যাক কাল কী হয়।” এর উত্তরে এজি জানান, “খুব দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। এত মামলায় আমায় উপস্থিত থাকতে হচ্ছে যে আমি বিষয়টি জানতাম না। খোঁজ নিয়ে দেখছি কেন এটা হচ্ছে।”


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর