বাবা যে কলেজের পিওন সেখান থেকেই ২০ লক্ষ টাকার প্যাকেজের চাকরি পেল মেয়ে! চমকে দেবে রিতিকার কাহিনী

বাংলা হান্ট ডেস্ক: জীবনের প্রতি পদক্ষেপে আসা প্রতিবন্ধকতাকে হারিয়ে যাঁরা লক্ষ্য স্থির রেখে এগিয়ে চলেন তাঁরাই সফলতা লাভ করেন। এই চিরসত্যকেই আরও একবার প্রমাণ করে দেখালেন ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) রিতিকা সুরিন। অভাবের ভ্রূকুটিকে দূরে সরিয়ে রেখেই গভীর পরিশ্রমের মাধ্যমে অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে গিয়েছেন তিনি। মূলত, দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণকারী রিতিকা বর্তমানে ২০ লক্ষ টাকার বার্ষিক প্যাকেজে চাকরির প্রস্তাব পেয়েছেন।

এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, গ্রেটার নয়ডায় অবস্থিত রিতিকার কলেজে একটি নামী সফ্টওয়্যার সংস্থা প্লেসমেন্টের জন্য এসেছিল। তখনই রিতিকা নিজের যোগ্যতার নিরিখে প্রথম প্রচেষ্টায় অটো ডেস্ক কোম্পানিতে ২০ লক্ষ টাকার বার্ষিক প্যাকেজের চাকরির প্রস্তাব পান। আর এভাবেই দীর্ঘ পরিশ্রমের ফলাফল পান তিনি।

বাবা পিওন, মা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন: ঝাড়খণ্ডের এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম হয়েছিল রিতিকার। প্রথম থেকেই তাঁর পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না। তাঁর বাবা-মা পরিবারের ভরণপোষণের জন্য ২০ বছর আগে ঝাড়খণ্ড থেকে নয়ডায় চলে এসেছিলেন। তারপর সেখানেই থেকে যান তাঁরা। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, তাঁর বাবা হলেন একজন পিওন। পাশাপাশি, রিতিকার মা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। এমতাবস্থায়, অভাবের সংসার হলেও মেয়ের পড়াশোনার খরচে কোনো খামতি রাখেন নি তাঁরা। রিতিকাও কঠোর পরিশ্রম করে পড়াশোনা করেন।

এই প্রসঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমাকে নিজেকে প্রমাণ করতে হত যে আমি যে সুযোগ পেয়েছি সেটা আমার প্রাপ্য। আমি আমার মাকে পরিশ্রম করতে দেখেছি। যে কলেজ থেকে আমি এমবিএ করেছি সেখানেই আমার বাবা পিওন হিসেবে কাজ করেন। আমি এই সব কিছু ভুলতে পারব না।”

2023 1image 15 13 486708557ritika 63cf9649bf80d

পাশাপাশি, রিতিকার বাবা নেভাল সুরিন বলেছেন, “আমি কখনোই ভাবিনি যে আমার মেয়ে এত ভালো পড়াশোনা করবে। কোনোরকম কষ্টে জীবন কাটিয়ে মেয়েকে পড়িয়েছি। আমরা ঠিকমতো হিন্দি বলতেও জানি না। কিন্তু রিতিকা খুব ভালো ইংরেজি বলতে পারে।” এছাড়াও, কলেজের সিইও জানান, ওই পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থার কথা মাথায় রেখে রিতিকাকে ৫০ শতাংশ স্কলারশিপ দেওয়া হয়। এছাড়া বিনামূল্যে বইও দেওয়া হয়। রিতিকা কঠোর অধ্যয়ন করেছে এবং অন্যান্য পড়ুয়াদের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর