বাংলাহান্ট ডেস্ক : শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে (Teacher’s Recruitment Scam) প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম (Partha Chatterjee) যুক্ত থাকাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো চাপে পড়ে গিয়েছে রাজ্য সরকার (State Government)। এবার সেই চাপ যেন আরো খানিকটা বেড়ে গেল। কারণ, রাজ্যের আরেক তৃণমূলের (Trinamool Congress) নেতা কুন্তল ঘোষ (Kuntal Ghosh) নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার পর সেই প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধেই সরাসরি মুখ খুললেন। ইডি জেরার মুখে তৃণমূলের এই যুবনেতা দাবি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তার আর্থিক লেনদেন ছিল। শুধু তাই নয়, পার্থর সেক্রেটারির হাত দিয়ে তিনি ১৫ পাঠিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন।
জানা গিয়েছে যে, ইডি আধিকারিকদের জেরার মুখে প্রথমদিকে কোনভাবেই সহযোগিতা করার চেষ্টা করছিলেন না কুন্তল ঘোষ। তবে বেশিক্ষণ তিনিই মুখ বন্ধ করে রাখতে পারেননি। তদন্তকারীদের একের পর এক প্রশ্ন বাণের সামনে এই যুব তৃণমূল নেতা ভেঙে পড়তে উঠে উঠে আসে প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রীর নাম। আধিকারিকদের কাছে সাফ জানিয়ে দেন, বিভিন্নভাবে বিভিন্ন সময়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে তিনি ১৫ কোটি টাকা পাঠান। কখনও নাকতলার অফিস আবার কখনও শপিং মলে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সেক্রেটারির সঙ্গে দেখা করে কুন্তল তাঁর হাত দিয়ে টাকা পাঠাতেন।
যদিও কুন্তলের এই স্বীকারোক্তি আরও খতিয়ে দেখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলেই মনে করছেন ইডি আধিকারিকরা, তবে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের সঙ্গে শাসকদলের একেবারে তৃণমূল স্তরে নেতা থেকে শুরু করে মন্ত্রিরাও যে যুক্ত রয়েছেন একথা জলের মত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। একের পর এক তৃণমূলস্তরের নেতারা গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকেই উঠে আসছে শাসক দলের তাবড় তাবড় নেতৃত্বের নাম। ফলে, দুর্নীতির জাল যে বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত, তা বুঝতে বিশেষ বেগ পেতে হচ্ছে না ইডি আধিকারিকদের।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কুন্তলের দু’টি ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে একটি ধূসর রঙের ডায়েরি ইডি উদ্ধার করেছে যেখানে পরিস্কারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে শাসক দলের আরেক নেতা তাপস মণ্ডলের নাম। এরপরেই কুন্তল ও তাপসকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার সময় সেই ডায়েরিটি সামনে রাখা হয়। তখন দেখা যায়, ডায়েরিতে ১৯ কোটি টাকার হিসাব উল্লেখ করা আছে। সেই টাকা তাপস কুন্তলকে দিয়েছেন বলে দাবি করার পাশাপাশি বেশ কিছু নথিও দেখান। সেই নথিতে কুন্তলের সইয়ের হদিশ মেলে। এরপর তাপসের কাছ থেকে ১৯ কোটি টাকা নেওয়ার প্রসঙ্গটি কুন্তল স্বীকার করে নেন। কুন্তল ঘোষ দাবি করেন যে, ‘‘আকাশছোঁয়া ষড়যন্ত্র হয়েছে।’’