বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সরকারি, সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে শিক্ষকতা (School Teachers) করলে তারা গৃহশিক্ষকতা (Private Tuition) করতে পারবেন না, বহুদিন থেকেই এই আইন। স্কুলের শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন করার অধিকার নেই, এই নিয়ে আগেই কড়া পদক্ষেপ করেছে রাজ্য। তবে সেই আইনকে একপ্রকার বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মনের খুশিতে টিউশন করে চলেছেন রাজ্যের সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা। তবে তা আর চলবে না। এবার এই বিষয়টি নিয়ে এ বার কঠোর অবস্থান নিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High court)।
গৃহশিক্ষকতায় অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিষয়ে রাজ্যকে তিন মাসের মধ্যে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। শনিবার মামলার শুনানিতে আদালতের নির্দেশ, যারা এভাবে টাকার লোভে আইন ভাঙছেন, তাদের বিরুদ্ধে এবার কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এবং এর নেপথ্যে বড় ভূমিকা রয়েছে গৃহশিক্ষকদের একটি সংগঠনের।
স্কুল শিক্ষক হওয়া সত্ত্বেও গৃহ শিক্ষকতা করা শিক্ষকদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন চালাচ্ছে প্রাইভেট টিউটরস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। তাদের অভিযোগ, বাড়তি টাকার লাভ নিয়ম ভেঙে বহু স্কুল শিক্ষক গৃহ শিক্ষকতা করছেন। অন্যদিকে, পড়ুয়া ও তাদের অভিভাবকদের মাথায় এটা ঢুকে গিয়েছে তাদের কাছে পড়লেই একমাত্র ভাল রেজাল্ট হওয়া সম্ভব।
উক্ত সংস্থা জানিয়েছে, এই সমস্ত অভিযোগ নিয়ে সমস্ত জেলার স্কুল পরিদর্শক ও মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের সচিবের কাছে বারংবার অভিযোগ জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি। তাই আর কোনো রাস্তা না থাকায় শেষমেষ বাধ্য হয়ে তারা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলাটি ওঠে।
মামলার শুনানিতে প্রাইভেট টিউটরস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবী জানান, মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ (অ্যাপয়েন্টমেন্ট, কনফার্মেশন, কনডাক্ট অ্যান্ড ডিসিপ্লিন অফ টিচার্স অ্যান্ড নন টিচিং স্টাফ) আইন, ২০১৮-র ৪ (৬) নম্বর ধারা অনুযায়ী, স্কুলে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের পর টাকার বিনিময়ে অন্য কোথাও তারা পড়াতে পারবেন না। তবে আইন অমান্য করে সেই কাজই করে চলেছেন স্কুল শিক্ষকরা।
সমস্ত অভিযোগ শুনে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, যদি দেখা যায়, নিয়ম ভঙ্গ করে কোনও স্কুলশিক্ষক গৃহশিক্ষকতা করছেন, তাহলে ওই তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে প্রথমে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হবে। আগামী তিন মাসের মধ্যে এই গোটা প্রক্রিয়া সমাপ্ত করার নির্দেশ আদালতের।