বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কাশ্মীর ফাইলস, কেরালা স্টোরির পর এবার গ্রেট ক্যালকাটা কিলিংস (Great Calcutta Killing) অনুসরণে তৈরি হতে পারে চলচ্চিত্র (Film)। বাংলার মানুষের স্মৃতিতে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বঙ্গ বিজেপি (Bengal BJP)। দলের সাংস্কৃতিক শাখা এই নিয়ে একটি চলচ্চিত্র বানানোর জন্য ময়দানে নেমেছে বলে সূত্রের খবর।
আর কি জানা যাচ্ছে? দল সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই এই ফিল্মের কাজ নিয়ে ভাবনা চলছে। ছবির পরিচালক হিসেবে থাকতে পারেন ‘কাশ্মীর ফাইলস’এর বিবেক অগ্নিহোত্রী। যদিও ছবির নাম এখনও ঠিক করা হয়নি। ছবিটির নাম ‘বেঙ্গল স্টোরি’ হবে না ‘দিল্লি ফাইলস’ হবে সেই বিষয়ে আলোচনা চলছে।
১৯৪৬ সালের অগস্টে ওই ঘটনার অনেক ফাইল দিল্লির দরবারে ‘গুম’ করে দেওয়া হয়েছিল বলে ছবির নামে দিল্লি থাকতে পারে বলে সূত্রের খবর। এই প্রসঙ্গে, দলের সাংস্কৃতিক শাখার আহ্বায়ক রুদ্রনীল ঘোষ জানিয়েছেন, ‘‘বিবেক বলেছিলেন, বিষয়টি নিয়ে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হবে। সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি। আপাতত চিত্রনাট্য লেখার কাজ চলছে। নাম কী হবে, কবে থেকে শুটিং শুরু হবে সেসব কিছুই এখনও চূড়ান্ত হয়নি।’’
ফিল্মের ভাবনা কোথা থেকে? এই বিষয়ে রুদ্রনীল জানিয়েছেন, “মানুষকে বাংলা সম্পর্কে, পশ্চিমবঙ্গ তৈরির ইতিহাস সম্পর্কে অবগত করতে হবে। বিগত কংগ্রেস সরকার, বাম সরকার এবং বর্তমান তৃণমূল সরকার ‘গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং’ ভুলিয়ে দিয়েছে। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, গোপাল পাঁঠার নাম ভুলিয়ে দিয়েছে। সেই সব হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস নিয়ে তথ্যচিত্র, পথনাটক তৈরি হবে।”
প্রসঙ্গত, গ্রেট ক্যালকাটা কিলিংস নিয়েও সিনেমা হওয়া উচিত, কাশ্মীর ফাইলস দেখে একথা বলেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কেন হঠাৎ এই উদ্যোগে তৎপর গেরুয়া শিবির? এই বিষয়ে বিজেপি নেতা মোহিত রায় বলেন, “সাধারণ মানুষের মধ্যে এখন এই নিয়ে আলোচনা হয় না। কিন্তু বাঙালির এই ইতিহাস জানা উচিত।” তার কথায়, “মেরুকরণ তৈরি হলেও বিষয়টি এড়ানো উচিত হবে না। পশ্চিমবঙ্গ সৃষ্টির বড় কারণ এই ঘটনা। অনেকেই তখন অবিভক্ত বাংলার কথা বলেছিলেন। কিন্তু এই ঘটনা দেখিয়ে দিয়েছিল কোথায় বিপদ লুকিয়ে আছে।”
যদিও এই উদ্যোগকে পরিকল্পিত চক্রান্তর আখ্যা দিয়েছেন অনেকেই। ছবি বিষয়ে তৃণমূলের জাতীয় মুখপাত্র সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, “যে ভাবে কাশ্মীর ফাইলস, কেরল স্টোরি বানিয়েছে, তেমনই একটি প্রচেষ্টা। যে রাজ্যগুলি বিজেপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে, সেখানে অশান্তি ছড়াতেই এই পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।”
তিনি মনে করিয়ে দেন, “সেই সময় শুধু কলকাতাতেই হিন্দু-মুসলিম মিলিয়ে অন্তত ১০ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিলেন। মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী বেলেঘাটায় অনশন করেছিলেন। সেই থেকে বাংলার মানুষ আর কখনও সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে প্রশ্রয় দেয়নি। এটা মনে রাখা উচিত।” সব মিলিয়ে ছবি শুরুর আগেই বিতর্কের জালে এই ছবি।