বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বর্তমানে বাংলার একাধিক দুর্নীতির তদন্ত করছে ইডি, সিবিআই। এবার সেরকমই কয়লা পাচারের (Coal Smuggling Case) তদন্ত করতে গিয়ে ইডির হাতে চাঞ্চল্যকর তথ্য। গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, বাংলা থেকে মাত্র এক বছরে ২২ বার পর্যন্ত বিদেশে (Foreign Trip) গিয়েছেন রাজ্যের একাধিক প্রভাবশালী (Influential Leaders)! যার মধ্যে বার পনেরো শুধুমাত্র দুবাইয়ে! এই তথ্য দেখেই মাথায় হাত ইডির (ED)।
দুবাইয়ের পাশাপাশি বারংবার যাওয়া গন্তব্যের তালিকায় রয়েছে তাইল্যান্ড, লন্ডনও। ইডি সূত্রে দাবি, ২০১৭ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যেই এই বিদেশ ভ্রমণের সংখ্যা লাগামছাড়া। এত ঘন ঘন কেন ওই প্রভাবশালীদের বিদেশ যেতে হয়েছে, সেই বিষয়েই তদন্ত করে দেখছে ইডি।
ইডির দাবি, একাধিকবার বিদেশযাত্রার টিকিট কাটা হয়েছিল মূলত মধ্য কলকাতার একটি ভ্রমণ সংস্থার মাধ্যমেই। ইতিমধ্যেই ওই সংস্থার অফিসে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করেছে গোয়েন্দারা। সংস্থাটির দুই মালিককেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছিল দিল্লিতে। আপাতত সেই সূত্র ধরেই এগোচ্ছে তদন্ত।
কারা রয়েছেন এই প্রভাবশালীদের তালিকায়? এখনও সরাসরি স্পষ্ট করে এই প্রভাবশালীদের নাম সামনে আনেনি ইডি। তবে কিছুটা জানিয়ে ইডির দাবি, তালিকায় রয়েছে এক সাংসদ, তার হিসাবরক্ষক ও তাদের দু’জনের পরিবারের সদস্যেরা।
তবে তৃণমূলের প্রাক্তন যুব নেতা বিনয় মিশ্রর নাম করে ইডির সোজাসুজি দাবি, কয়লা পাচারের টাকা বিদেশে রেখে আসতে এক সময়ে ঘন ঘন বিদেশে গিয়েছেন বিনয়। তদন্তকারীদের দাবি, ওই তিন বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকা এদেশ থেকে বিদেশে পাচার করা হয়েছিল। পরে আবার সেই টাকা কখনও দেশে বিনিয়োগ করে, কখনও সম্পত্তি কিনে, কখনও আবার নির্মাণ ব্যবসাতেও লগ্নি করা হয়েছে।
ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রভাবশালীদের এত এত বার বিদেশে যাওয়ার পিছনে কারণ হিসেবে মূলত চিকিৎসার প্রয়োজন দেখানো হয়েছে। তবে সত্যিই কী চিকিৎসা নাকি এর পেছনে লুকিয়ে রয়েছে আর্থিক স্বার্থও! তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
অন্যদিকে, ইডির দাবি, কয়লা পাচারের অভিযুক্ত অনুপ মাঝির বয়ান অনুযায়ী, পাচারকারীদের সঙ্গে প্রভাবশালীদের যোগাযোগ রক্ষা করতেন বিনয়। প্রভাবশালী ও তাদের আত্মীয়দের নামে কয়েক হাজার কোটি টাকাও নাকি বিদেশে রাখার ব্যবস্থাও তিনি করেছিলেন। যদিও এই নিয়ে তদন্ত চলছে। এবার তদন্তে ফের কোন নয়া মোড় আসে, কয়লা পাচারের জটলাই বা কতটা কাটে সেটাই দেখার।