বাংলাহান্ট ডেস্ক: ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অল রাউন্ডার বলা যায় রবি কিষণকে (Ravi Kishan)। মূলত ভোজপুরি সিনেমার অভিনেতা হলেও বলিউড থেকে দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রি সর্বত্রই নিজের অভিনেতা প্রতিভার পরিচয় রেখেছেন তিনি। শুধু অভিনয় নয়, পাশাপাশি রাজনীতিটাও সমান তালে চালিয়ে যাচ্ছেন রবি কিষণ।
রাজনীতির তুলনায় রবির অভিনয় কেরিয়ার অবশ্য বেশি পুরনো। ৩১ বছর কাটিয়ে ফেলেছেন তিনি এই ইন্ডাস্ট্রিতে। মুম্বইয়ের বস্তিতে ছোটবেলা কেটেছে রবি কিষণের। পরবর্তীকালে উনি মুম্বই ছেড়ে চলে যান জৌনপুর। কিন্তু রবির ভাগ্য তাঁকে ফের মুম্বইতেই টেনে এনেছিল। অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন ছিল তাঁর। কিন্তু বাড়িতে বাবা ছিলেন নারাজ। শেষমেষ নিজের স্বপ্নকে প্রাধান্য দিয়েই ৫০০ টাকা সম্বল করে মুম্বই পালিয়ে আসেন বছর সতেরোর রবি কিষণ।
মুম্বইয়ে তাঁর জীবন সহজ ছিল না। কোনো ফিল্মি ব্যাকগ্রাউন্ড না থাকায় একটা কাজ জোগাড় করতেই কালঘাম ছুটে যাওয়ার অবস্থা হয়েছিল রবির। বেশ কিছু ছোট চরিত্রে অভিনয় করলেও মন ভরছিল না তাঁর। ১৯৯২ সাল তাঁর কেরিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। ওই বছরেই মুক্তি পেয়েছিল ‘পীতাম্বর’ যা বড় ব্রেক এনে দিয়েছিল রবি কিষণকে।
শুধু বড়পর্দায় নিজেকে আটকে রাখেননি রবি। সিরিয়ালেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। রবির কেরিয়ারে দ্বিতীয় ব্রেক এনে দেন সলমন খান। তাঁর ‘তেরে নাম’ ছবিতে একটি ছোট ভূমিকাতেই বেশ নজর কেড়েছিলেন তিনি। ২০০৩ সালে তেরে নাম মুক্তি পায়। আর ওই বছরই ভোজপুরি ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখেন রবি কিষণ।
ভোজপুরি ইন্ডাস্ট্রি তাঁকে দু হাত বাড়িয়ে আপন করে নিয়েছিল। ভোজপুরি সিনেমার অমিতাভ বচ্চন তকমা পান রবি কিষণ। দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতেও বেশ পরিচিত নাম রবি কিষণ। তিন দশকের কেরিয়ারে ২০০-র ও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি।
সোনায় বাঁধানো ফিল্মি কেরিয়ারে রোজগারও কম হয়নি রবির। তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ শুনলে চোখ কপালে উঠবে। মুম্বইতে ৬টি ফ্ল্যাট রয়েছে অভিনেতার। এক একটি ফ্ল্যাটের মূল্য প্রায় ১-২ কোটি টাকা। পাশাপাশি দুটি কমার্শিয়াল ফ্ল্যাটও রয়েছে যেগুলোর দাম আনুমানিক ৫ কোটি এবং ৭০ লক্ষ টাকা। এ তো গেল মুম্বই। জৌনপুরেও প্রায় ২ কোটি টাকার একটি বাড়ি রয়েছে রবির।
গ্যারেজে বহুমূল্য বিলাসবহুল গাড়ির সংগ্রহ রয়েছে রবির। মার্সিডিজ বেঞ্জ থেকে শুরু করে বিএমডব্লিউ এক্স ফাইভ, জ্যাগুয়ার এফপেস এর মতো গাড়ি রয়েছে যেগুলোর দাম ১৩ লক্ষ থেকে ৪০ লক্ষ পর্যন্ত। এক একটি ছবির জন্য প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক নেন রবি। পাশাপাশি বিজ্ঞাপন, ব্র্যান্ড প্রোমোশন তো রয়েছেই। সূত্রের খবর মানলে, সব মিলিয়ে রবি কিষণের সম্পত্তির পরিমাণ আনুমানিক ২০ কোটি টাকা।