বাংলাহান্ট ডেস্ক: আর্থিক প্রতারণা মামলায় নাম জড়িয়েছে জনপ্রিয় অভিনেত্রী তথা সাংসদ নুসরত জাহান (Nusrat Jahan)। সম্প্রতি তৃণমূলের তারকা সাংসদ নুসরত জাহানের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ নিয়ে ইডির দ্বারস্থ হন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। অভিযোগ ফ্ল্যাট দেওয়ার নাম করে নুসরতের সংস্থা সেভেন সেন্সেস ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড ৪২৯ জনের কাছ থেকে প্রায় ২৪ কোটি টাকা নেয়। তবে বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও ফ্ল্যাট পাননি কেউ।
বুধবার সাংবাদিক সম্মেলন করে নুসরত দাবি করেন, সেভেন সেন্সেস ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড থেকে ১ কোটি ১৬ লাখ ৩০ হাজার ২৮৫ টাকা তিনি লোন নিয়েছিলেন। ২০১৭ সালের ৬ মে সুদ সমেত ১ কোটি ৪০ লাখ ৭১ হাজার ৯৯৫ টাকা ফেরতও দেন। ২০১৭-র ১ লা মে তিনি ওই সংস্থার ডিরেক্টর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। যদিও এতে বিতর্ক যে থেমে গিয়েছে তেমনটা নয়। উল্টে যত সময় গড়াচ্ছে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ উঠে আসছে সাংসদের বিরুদ্ধে। জোড়ালো হচ্ছে বিতর্ক। তবে অভিনেত্রী নুসরতকে নিয়ে বিতর্ক কী এই প্রথম? একেবারেই নয়! নানা সময় নানা ভাবে বিতর্কে জড়িয়েছেন শাসকদলের এই নেত্রী।
২০১২ সালে প্রথমবার বিতর্কের শিরোনামে উঠে আসে নুসরতের নাম। পার্কস্ট্রিট ধর্ষণকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত কাদের খানের প্রেমিকা থাকাকালীন বিতর্কে জড়িয়েছিলেন নুসরত। অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ ছিল, যে তিনি নাকি কাদেরকে আন্ডারগ্রাউন্ড থাকতে সাহায্য করেছিলেন। পুলিশি তদন্ত চলাকালীন নুসরত লুকিয়ে যোগাযোগও রাখতেন প্রেমিকের সাথে। যদিও এই সমস্ত অভিযোগ একেবারেই অস্বীকার করেন নুসরত। ঘটনার পরেই কাদের খানের সঙ্গে সম্পর্ক অস্বীকার করেছিলেন অভিনেত্রী। পুলিশের কাছেও একথা জানান তিনি। সেই ধর্ষণকাণ্ডের দীর্ঘ চার বছর পর গ্রেফতার হয় কাদের খান।
এরপর ২০১৯ সালে বস্ত্র ব্যবসায়ী নিখিল জৈনের সঙ্গে প্রেম এবং ঘনিষ্ঠতা। এরপর সাতপাকে বাঁধা পড়েন অভিনেত্রী। তাক লাগানো অভিনেত্রীর ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ে উপস্থিত ছিলেন দু পরিবারের লোকজন। ছিলেন নুসরতের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তীও। পরে কলকাতায় তাদের রিসেপশনের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বিয়ের পর ধর্ম পরিবর্তন না করলেও হিন্দু বধূ সাজে বেশ কয়েকবার শাখা-পলা সিঁদুর পরতে দেখা যায় তাকে। যা নিয়ে বিতর্ক হয়।
নিখিলের সঙ্গে বিয়ের এক বছরের মধ্যেই অভিনেতা যশের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছিল। তারপরে নুসরতের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ে। দূরত্ব বাড়ে স্বামীর সাথে। ওদিকে এরই মধ্যে বিবৃতি দিয়ে নুসরত জানান তার সঙ্গে আসলে নিখিলের কোনও বিয়েই হয়নি। তুরস্কে রেজিস্ট্রেশন করে বিয়ে হলেও তাদের সেটা হয়নি আর ভারতে স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টেও তাদের বিয়ে হয়নি। তাই নিখিলের সঙ্গে লিভ ইন ছাড়া তার কোনও সম্পর্কই ছিল না। নিখিল বিবাহ বিচ্ছেদ মামলা করে ওদিকে নুসরত তো দাবি করেন নিখিল তার স্বামীই নন। আলাদা হয়ে যান দুজনে।
এর কিছুদিনের মধ্যেই ২০২১ সালে মা হন নুসরত। কোলে পুত্র সন্তান আসে তার। নুসরতের সন্তান জন্ম নিয়ে বিস্তর কাঁটাছেড়া হয়। সন্তানসম্ভবা হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই সন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। পড়ে অবশ্য সমস্ত কল্পনা জল্পনার অবসান ঘটিয়ে নুসরত জানান তার সন্তানের অভিভাবক যশ। ওদিকে চলতি বছর জুলাই মাসে নীল বাতি দেওয়া সরকারি গাড়িতে চেপে শুটিং সেটে পৌঁছন নুসরত ও যশ। সেই নিয়েও কম বিতর্ক হয়নি। সবমিলিয়ে বিতর্ক যেন সর্বদাই তাড়া করে বেড়ায় নুসরতকে।