গঙ্গার ভাঙনে তলিয়ে যাচ্ছে একের পড় এক বাড়ি! আতঙ্কে প্রহর গুনছেন বৈদ্যবাটির বাসিন্দারা

বাংলা হান্ট ডেস্ক : একটু একটু করে বাড়ছে গঙ্গার করাল গ্রাস। আর তার জেরেই ফাটল দেখা দিয়েছে গঙ্গা তীরবর্তী এলাকায় অবস্থিত বাড়িতে। ঘটনা হুগলির বৈদ্যবাটির ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের রাজবংশী পাড়ার। সেখানেই গঙ্গার ভয়ংকর রূপে ইতিমধ্যে তলিয়ে গিয়েছে বেশ কয়েকটি বাড়ি। ফাটল ধরেছে গঙ্গার ঘাট সহ বেশ কয়েকটি বাড়ি ও রাস্তায়। তাতেই আতঙ্কিত হয়ে রাতের ঘুম উড়েছে বাসিন্দাদের। যারমধ্যে অধিকাংশই খেটে খাওয়া মানুষ বা মৎসজীবী।

এই বর্ষাটা রক্ষা পাবে তো? এমনই আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন বৈদ্যবাটির ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের রাজবংশী মৎসজীবীরা। মাথার ছাদটুকু চলে গেলে তারা কোথায় যাবে, এইসব ভাবনা ঘিরে ধরেছে এই দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলিকে। কারণ, যে ভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে একটু একটু করে পাড় ভাঙতে ভাঙতে প্রায় ২০ থেকে ২৫ ফুটের নদী গর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। বাড়ির পাশাপাশি, গঙ্গার তীরে থাকা বড় বড় গাছও নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে বাড়িতে থাকাও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে অনেকের ক্ষেত্রে। বসবাসের জন্য ভয়ানক হয়ে উঠেছে বাড়িগুলি। ঝুঁকি থাকলেও বাধ্য হয়ে তাতেই চলছে বসবাস। স্থানীয়দের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে এইদিন এলাকা পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন বৈদ্যবাটি পুরসভার পুরপ্রধান পিন্টু মাহাত। এলাকার মানুষদের সাথে কথাও বলেছেন তিনি। জানিয়েছেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করা হবে।

whatsappximagex2023 04 12xatx9.05x.22xpmx 1

যদিও স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, এর আগেও একাধিকবার বিভিন্ন অধিকারিক এলাকা পরিদর্শন করে গিয়েছেন। তবে কাজের কাজ হয়নি কিছুই। তারা এটাও বলছেন যে, বৈদ্যবাটির এই পরিস্থিতি আজকের নতুন নয়। বিগত কয়েক বছর ধরেই এরকম বিপদ মাথায় নিয়ে বসবাস করছেন তারা। স্থানীয় বাসিন্দা রামপ্রসাদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই আমরা এখানে বসবাস করি। কিন্তু যে ভাবে গঙ্গার ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে থাকা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। আজ বৈদ্যবাটির পুরপ্রধান এসেছিলেন। এর আগে বিধায়ক এসেছিলেন, এসডিও এসেছিলেন, বারংবার আসছেন আর যাচ্ছেন, কিন্তু আমরা কোন সুরাহা পাচ্ছি না। আমরা বৈদ্যবাটি পুরসভাকেও জানিয়েছিলাম। আমরা চাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাজটা হোক।’

1659883889 ganga web thumb

এই প্রসঙ্গে পুরপ্রধান পিন্টু মাহাত তার বক্তব্যে বলেন, ‘পার্শ্ববর্তী যে ঘাটগুলি রয়েছে সেগুলি গঙ্গার গ্রাসে তলিয়ে যায়। তখন আমরা পুরসভা ও বিধায়ক মিলে সেচ দফতর এবং KMDA-কে চিঠি করি। তারা ইঞ্জিনিয়ার পাঠিয়ে এলাকা পরিদর্শন করে গেলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এখন যা অবস্থা তাতে অস্থায়ীভাবে রোধ করা না গেলে, সাতটি বাড়ি যে কোনও সময় জলের তলায় তলিয়ে যেতে পারে। যত দ্রুত সম্ভব বাঁশ, ইট দিয়ে ওই জায়গাটির ভাঙন যাতে রোধ করা যায় তার ব্যবস্থা করছি। প্রয়োজনে মন্ত্রী, বিধায়করা মিলে সেচ দফতরের মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবো, যাতে স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধ করা যায়। গঙ্গার পাড়ে যে সমস্ত পরিবারগুলি রয়েছে তারা দিন আন দিন খাওয়া, মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। তাই তাদের অন্যত্র সরে যেতে বললে হবে না। তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে সেচ দফতরকে।’

Moumita Mondal
Moumita Mondal

মৌমিতা মণ্ডল, গ্র্যাজুয়েশনের পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। বিগত ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে লেখালেখির সাথে যুক্ত। প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর