বাংলা হান্ট ডেস্ক : গালওয়ান সংঘর্ষের (Galwan Vally Violence) পর থেকেই বারুদের স্তূপের উপর দাঁড়িয়ে লাদাখ সীমান্ত (Ladakh Border)। গোগরা-হটস্প্রিং থেকে সেনা সরালেও দেপসাং সমতলে মজুত লালফৌজ। এই প্রেক্ষাপটে সেপ্টেম্বরে জি-২০ সামিটে মুখোমুখি হবেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (Xi Jinping) ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। তার আগেই বেজিংকে কৌশলী বার্তা দিল নয়া দিল্লি। সম্প্রতি ‘চিন বিরোধী’ জোটের সামরিক মহড়ায় শামিল না হলেও আগামিকাল থেকে মালাবার নৌ-মহড়ায় (Malabar Naval Exercise) অংশ নিচ্ছে ভারত।
২২ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত সামরিক মহড়া চালায় তেরোটি দেশ। অস্ট্রেলিয়ার (Australia) পৌরহিত্যে এর পোশাকি নাম ‘ট্যালিসম্যান সেবার’ বা জাদু তলোয়ার’। এই মহড়ায় অংশ নেয় আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি ও জাপানের মতো দেশগুলির প্রায় ৩৪ হাজার সেনা। জলে, স্থলে, জঙ্গলে ও আকাশে যুদ্ধের কৌশল ঝালিয়ে নেয় তারা। ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনের ‘দাদগিরি’র মাঝে এই মহড়া বিশেষ বার্তাবহ। ট্যালিসম্যান সেবারে অংশ নিতে ভারতকে একাধিকবার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ। কিন্তু চিনের গোঁসা হতে পারে ভেবেই নাকি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ভারত। সেপ্টেম্বরে জি-২০ সামিটের আগেই লাদাখে সীমান্ত সমস্যার সমাধান খুঁজতেই এই পদক্ষেপ।
ভারত মহাসাগর বা প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যে লালফৌজের গা-জোয়ারি মেনে নেওয়া হবে না সেই বার্তা দিয়ে মালাবার মহড়ায় অংশ নিচ্ছে নয়া দিল্লি। আগামিকাল, অর্থাৎ ১১ আগস্ট থেকে অস্ট্রেলীয় উপকূলে শুরু হচ্ছে এই নৌ-মহড়া। চলবে ২১ আগস্ট পর্যন্ত।
১৯৯২ সাল থেকে আমেরিকার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক মালাবার নৌ মহড়া শুরু করেছিল ভারত। ২০০৭ সালে অস্থায়ী সদস্য হিসেবে তাতে যোগদান করে অস্ট্রেলিয়া। সে বার জাপান এবং সিঙ্গাপুরকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু ওই দেশগুলি অংশগ্রহণ করার পরে আপত্তি জানায় চিন। তার জেরে পরবর্তী প্রায় দু’দশক ধরে মালাবার দ্বিদেশীয় মহড়া হিসেবেই চলে আসছিল।
দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের আধিপত্য বাড়তে থাকায় ২০১৫ সালে জাপানকে মালাবার নৌ মহড়ার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০১৭ সালে সেই ত্রিদেশীয় মহড়ায় পর্যবেক্ষক হিসেবে যোগ দিতে চেয়ে অনুরোধ জানায় অস্ট্রেলিয়া। চিনের আপত্তির কারণে প্রাথমিক ভাবে নিয়ে দিল্লির তরফে দ্বিধা ছিল। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভিডিয়ো বৈঠকের পর জট কেটে যায়। লাদাখে চিনের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধের প্রেক্ষিতে অস্ট্রেলিয়াকে নৌ মহড়ায় অংশ নিতে আমন্ত্রণ জানিয়ে মোদি সরকার বেজিংকে কড়া বার্তা দিল বলেই মত কূটনীতিবিদদের।