বাংলা হান্ট ডেস্ক : আজ থেকে প্রায় ২২ বছর আগে মুক্তি পেয়েছিল সানি দেওল এবং আমিশা প্যাটেল অভিনীত ছবি ‘গদর এক প্রেম কথা’ (Gadar Ek Prem Katha)। হিন্দি সিনেমার ইতিহাসের অন্যতম ব্যবসা সফল ছবি এটি। দেশভাগের প্রেক্ষাপটে লেখা এই গল্পে ছিল রামায়ণের নির্যাস। শ্রীরাম যেমন মাতা সীতাকে উদ্ধার করতে যুদ্ধ রচনা করেছিলেন তেমনই আমাদের তারা সিং-ও তার সাকিনাকে উদ্ধার করতে ছুটে গিয়েছিলেন পাকিস্তানে।
তবে অনেকেই হয়ত জানেননা যে, ১৯৪৭ সালের ভারত-পাকিস্তান (India-Pakistan Partition) বিভাজনের যে গল্প পর্দায় ফুটে উঠেছিল তার এক বর্ণও কিন্তু মিথ্যে নয়। তারা-সাকিনার প্রেমের গল্প হুবহু সত্যি। শুধু পার্থক্য এটুকুই যে বাস্তব গল্পটিতে তারা-সাকিনার গল্পের মত মিলন দেখা যায়নি। বরং এক মর্মান্তিক পরিণতির শিকার হয়েছিলেন বাস্তবের তারা। আজকের প্রতিবেদনে পাঠকদের কাছে সেই গল্পই উপস্থাপিত করব।
এই গল্প জানার জন্য পাঠকদের পিছিয়ে যেতে হবে ৭০ বছর আগে। ভারত-পাকিস্তান বিভাজনের প্রেক্ষাপটে যখন হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা চলছিল তখন বুটা সিং নামের একজন ভারতীয় সৈনিক এক মুসলিম মেয়ের প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন। সেই মেয়ের নাম ছিল জয়নাব। তারা সিং আর সাকিনার মত তাঁরাও একে অপরের প্রেমে পড়ে। বিয়েও করেন দুজনে। জন্ম নেয় এক ফুটফুটে কন্যা সন্তান।
আরও পড়ুন : ‘বেশি কথা না বলাই ভালো..’, ইনস্টায় স্বস্তিকাকে আনফলো করা নিয়ে স্পষ্ট জবাব দিব্যজ্যোতির
মেয়েকে নিয়ে বেশ ভালই দিন কাটাচ্ছিলেন তাঁরা। কিন্তু দেশ ভাগের পর সরকার সেই বিয়েকে অবৈধ ঘোষণা করে। যেহেতু জয়নাব পাকিস্তানের নাগরিক ছিলেন তাই তাঁকে বাধ্যতামূলকভাবে পাকিস্তান চলে যেতে হয়। তবে বুটা সিং-র পাকিস্তান যাওয়ার অনুমতি ছিলনা। অথচ তারপক্ষে স্ত্রীকে ছেড়ে বাঁচাও সম্ভব ছিলনা।
আরও পড়ুন : একবারে সাধ মেটেনি, বিয়েতে হ্যাট্রিক করছেন এই ৫ টলি অভিনেত্রী! তালিকায় বড় নাম
‘গদর’ ছবিতে সাকিনা তার পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে তারা সিং-র কাছে ফিরে এসেছিলেন ঠিকই তবে বাস্তবে জয়নাব সেই সাহস দেখাতে পারেননি। পরিবারের চাপের কাছে হার স্বীকার করে নেয় সে। সকলের সামনে স্বামী এবং সন্তানের সামনে ফিরে যেতে অস্বীকার করে জয়নাব। এমনকি বুটা সিংয়ের সঙ্গে বিয়ে ভেঙে তিনি অন্যত্র বিয়ে করে নেন। এখন প্রশ্ন, বুটা সিং-র কী হল?
আরও পড়ুন : এবার টলিউডে অভিনয় বাহুবলি খ্যাত এই জনপ্রিয় অভিনেতা! ফেলুদার ছবিতে থাকছে বিরাট চমক
এই ঘটনার পর বুটা সিং আর জীবিত ফেরেননি। কথিত আছে, স্টেশনে বসে ভারতে ফেরার ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন বুটা সিং এবং তাঁর ছোট্ট মেয়ে। একরত্তি তখন মায়ের কাছে যাওয়ার বায়না জুড়েছে। এই দুঃখ যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন ঐ হতভাগ্য প্রেমিক। পরবর্তীকালে পাকিস্তান তাকে ‘শহীদ ই মহব্বত’ খেতাব দেয়। যদিও এই ঘটনার পর জয়নাব বহাল তবিয়তেই ছিলেন বলে শোনা যায়।