INDIA-র জোট সঙ্গী তৃণমূল নয়, বিজেপির সঙ্গে বাসা বাঁধছে CPIM! বামেদের কীর্তি জানলে অবাক হবেন

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিচুস্তরে কোনও সমঝোতা নয়! পঞ্চায়েত ভোটের আগে এমনটাই নির্দেশ এসেছিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের তরফে। পঞ্চায়েতের (Panchayat Vote) পর বোর্ড গঠনের সময়ে তাদের প্রতীকে জেতা কর্মীরা যে ক্ষমতা হাতড়ে বিজেপিকে (BJP) সমর্থন করতে পারেন সেই আশঙ্কাতে আগেভাগেই দলের কর্মীদের কড়া বার্তাও দিয়েছিলেন সিপিএম (CPM) রাজ্য নেতৃত্ব।

তবে কোথায় কী! বাম নেতৃত্বের আশঙ্কাকে সত্যি করে বহু পঞ্চায়েতে বিজেপির সাথে হাত মিলিয়েছে সিপিএম। অনেক ক্ষেত্রে বিজেপির সঙ্গে একজোট হতে দেখা গিয়েছে সিপিএম এবং কংগ্রেসকেও।সিপিএমের দলীয় প্রতীকে জয়লাভ করা বহু পঞ্চায়েত সদস্য দুহাত তুলে সমর্থন করেছে গেরুয়া শিবিরকে। আবার কোথাও কোথাও তো খোদ তাদের সবথেকে বড় বিরোধী তৃণমূলের সাথেই হাত মিলিয়েছে তারা। আর এই সব কিছুই কানে এসেছে সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বের।

এবার দলের সেই সকলের কর্মীদের বিরুদ্ধে বড় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, কেও পার পাবেনা। জেলা থেকে যে তথ্য উঠে আসছে তাতে এখনও পর্যন্ত দলের কয়েকশ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক পদক্ষেপ করা হচ্ছে। নির্দেশ অমান্য করার অপরাধে কোথাও ‘শোকজ’ বা ‘সাসপেনশন’ তবে কোথাও সরাসরি ‘বহিষ্কার’।

আরও পড়ুন: পৌরসভা, TMC-কে জানিয়েও মিললো না শববাহী গাড়ি! হেঁটেই পরিযায়ী শ্রমিকের দেহ শ্মশানে নিয়ে গেলেন প্রতিবেশীরা

অর্থাৎ দলের কথা না মানলে যে কাউকে রেয়াত করা হবে না তাই এবার খাতায়-কলমে বুঝিয়ে দিচ্ছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই পূর্ব মেদিনীপুরে বিরোধী তৃণমূল ও বিজেপির সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রাখার অভিযোগে ৮ জনকে বহিষ্কার করেছে দল।

ওদিকে অন্তর্ঘাতের জন্য ৬৯ জনকে শোকজ এবং নির্বাচনে নিষ্ক্রিয় থাকার জন্য দুশোরও বেশি কর্মীকে নোটিসও পাঠিয়েছে সিপিএম। হুগলিতে ইতিমধ্যেই পাঁচ জনকে দল থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। নদিয়াতেও একই ঘটনা। পাশাপাশি বিভিন্ন জেলার কর্মীরা দলের নজরে আছে বলেও জানা গিয়েছে।

আবার যেসব ক্ষেত্রে দলের সদস্য নন, অর্থাৎ দলের কাঠামোর বাইরে থাকা লোকজন নির্দেশ অমান্য করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কোনও সাংগঠনিক পদক্ষেপ করা না গেলেও সেসব স্থানে লিফলেট ছড়িয়ে তাদের সাথে দলের যে আর কোনও সম্পর্ক নেই সেই বার্তা দেওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ‘মুসলমান কা বাচ্চা হ্যায়, মারো, ও বড় হয়ে কী করবে…’, ফিরহাদের কথায় তোলপাড়

এই বিষয়ে বাম নেতা সুজন চক্রবর্তীর প্রশ্ন, ‘‘আমরা তো সাংগঠনিক ভাবে যা পদক্ষেপ করার করছি। কিন্তু যেখানে তৃণমূল-বিজেপি মিলিজুলি বোর্ড গঠন করেছে, সেখানে এই দু’দল কী করবে?’’ পূর্বে এই প্রেক্ষাতেই তিনি বলেন, ‘পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের ক্ষেত্রে তৃণমূল ও বিজেপিকে যদি সিপিআইএমের জয়ী কোনও সদস্য সমর্থন দিয়ে থাকেন, তার বিরুদ্ধে পার্টি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

cpm bjp flag

তবে নেতার প্রশ্ন, ‘সিপিআই-কে ঠেকাতে তৃণমূল ও বিজেপি যেখানে জোট বেঁধেছিল তাদের সদস্যদের বিরুদ্ধে তৃণমূল বা বিজেপি কেউ কি ব্যবস্থা নেবে? এমন সাহস তাদের নেই।’ নেতার সাফ কথা, ‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমাদের অবস্থান ছিল অত্যন্ত পরিষ্কার। বিজেপি তৃণমূল উভয়ের বিরুদ্ধেই একজোট হয়ে লড়াই করতে হবে। সারা রাজ্যে তাই হয়েছে। ৯৮ শতাংশ তাই হয়েছে। কিন্তু দুই এক জায়গায় ব্যতিক্রম হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ অতি উৎসাহী হয়ে এলাকার ইস্যুতে ভাবিত হয়ে তৃণমূলকে ঠেকাতে বিজেপিকে বা বিজেপিকে ঠেকাতে তৃণমূলকে বোর্ড গঠনে সাহায্য করেছেন। যদিও সেই সংখ্যাটা অত্যন্ত নগণ্য।’ তবে যেখানে আসন্ন লোকসভায় বিজেপি ও মোদী সরকারকে হারাতে বিরোধী জোটে নাম লিখিয়েছে তৃণমূল, সিপিএমের উভয়েই সেখানে বাংলার চিত্রটা কিন্তু ভিন্ন। এ রাজ্যে বিভিন্ন পঞ্চায়েতে বাম-বিজেপির বন্ধুত্ব কেমন জানো গুলিয়ে দিচ্ছে গোটা পরিকল্পনা। এককথায় পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েতে রাম-বাম মিলে মিশে একাকার।

 

 

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর