বাংলা হান্ট ডেস্ক : হিজাবের (Hijab)পর এবার আবায়া (Aabaya)। সরকারি স্কুলে মুসলিম পড়ুয়াদের ঢিলেঢালা পোশাক আবায়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল ফ্রান্স (France) সরকার। নিষেধাজ্ঞার কথা রবিবার ঘোষণা করেন ফরাসি শিক্ষামন্ত্রী। আগামী শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিন থেকে এই নতুন নিয়ম কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
কী নির্দেশ সরকারের? ফ্রান্সের শিক্ষামন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল আটাল জানান, আগামী ৪ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে ফ্রান্সের নতুন শিক্ষাবর্ষ। ওই দিন থেকে ঢিলেঢালা পোশাক আবায়া পরে কোনও মুসলিম পড়ুয়া সরকারি স্কুলে আসতে পারবে না বলে জানান তিনি। পোশাক দেখে ধর্ম যাতে চিন্তে না পারা যায়, তাই এই নিষেধাজ্ঞা বলে একটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
আবায়া কী? আবায়া হলো একটি সাধারণ ঢোলা বোরকাজাতীয় পোশাক, যা উত্তর আফ্রিকা ও আরব উপদ্বীপসহ মুসলিম বিশ্বের নারীদের একাংশ পরে থাকে। ইন্দোনেশীয় ও মালয়েশীয় ঐতিহ্যবাহী পোশাক ‘কেবায়া’ নামটি আবায়া থেকেই এসেছে। ঐতিহ্যবাহী আবায়া কালো রঙের হয় এবং মাথা, হাত ও পা ব্যতীত পুরো শরীর ঢেকে রাখে।
পরের মরসুম থেকেই লাগু নিষেধাজ্ঞা : সেপ্টেম্বরেই শুরু হচ্ছে ফ্রান্সের নতুন স্কুল মরশুম। আর তা শুরুর আগেই এমন ঘোষণা করতে চলেছে ফরাসি প্রশাসন। উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে মাথার স্কার্ফ বা হিজাব পরা নিষিদ্ধ হয়েছিল ফ্রান্সের স্কুলে। পরে ২০১০ সালে জনসমক্ষে মুখঢাকা পোশাক পরাতেও জারি হয়েছিল নিষেধাজ্ঞা। এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন সেদেশের ৫০ লক্ষ মুসলিমরা (Muslim)। এর মধ্যেই এবার নিষিদ্ধ হল আবায়া।
কী বললেন সে দেশে শিক্ষামন্ত্রী? এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফ্রান্সের শিক্ষামন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল আটাল জানিয়েছেন, ‘স্কুলে আর আবায়া পরা যাবে না। কেউ ক্লাসে এলে যেন তাদের পোশাক দেখে ধর্ম না বোঝা যায়। এমনটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি।’ প্রসঙ্গত, বেশ কয়েক মাস ধরে মুসলিম শিক্ষার্থীদের আবায়া পরা নিয়ে বিতর্ক ঘনিয়েছিল। অবশেষে এই পদক্ষেপ করতে চলেছে পশ্চিম ইউরোপের দেশটি।
আরও পড়ুন : আর কয়েকটা দিন, আদিত্য-L1 লঞ্চের দিনক্ষণ ঘোষণা ISRO-র, কবে হবে সূর্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা?
নির্দেশের বিরুদ্ধে সরব মুসলিম জনতা : ধর্ম নিশ্চিত করে, এমন পোশাকের উপর ম্যাক্রোঁ সরকারের জারি করা নিষেধাজ্ঞাকে সমর্থন করেছে কট্টরপন্থী দলগুলি। অন্যদিকে, পোশাকে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ফরাসি সরকার মুসলিম মহিলাদের অপমান করেছে বলে দেশের বামপন্থী দলগুলি মনে করছে। আবায়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি নিয়ে সরব হয়েছে ফ্রান্সের বেশ কয়েকটি মুসলিম সংগঠন-ও। কেবলমাত্র পোশাক ধর্মীয় প্রকারভেদ তৈরি করে, ফ্রান্স সরকারের এই ধরনের ধারনার নিন্দা করা হয়েছে সংগঠনগুলির তরফে। দাবি জানানো হয়েছে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারেও ।