বাংলাহান্ট ডেস্ক : প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুলে পড়াশোনা। বাড়ির অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। কিন্তু অদম্য জেদ আর ইচ্ছা শক্তিকে হাতিয়ার করে সেই ছেলে আজ ডাব্লুবিসিএস অফিসার হতে চলেছে। বিকাশ মান্না নন্দকুমার (Nandakumar) ব্লকের কল্যাণপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সোদলপুর গ্রামের বাসিন্দা। গ্রামের ছোট্ট নার্সারিতে স্কুল জীবন শুরু তার।
কল্যানপুরের স্কুল থেকেই পাশ করেন মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক। এরপর রসায়ন নিয়ে স্নাতক করেন হলদিয়া গভারমেন্ট কলেজ থেকে। কলেজ পাশ করার পর পিএসসিতে উত্তীর্ণ হয়ে হাওড়া জেলা শাসক দপ্তরের পঞ্চায়েত ও গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরে চাকরি পান। কিন্তু তার মনে থেকে যায় ডব্লিউবিসিএস হওয়ার বাসনা। তিনবারের চেষ্টায় অবশেষে ডব্লুবিসিএস উত্তীর্ণ হলেন বিকাশ মান্না।
আরোও পড়ুন : লোকনাথের জন্মদিনে এভাবে করুন পুজো, তুষ্ট হবেন বাবা! দেবেন আশীর্বাদও
WBCS (২০২১ A) অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অফ রেভিনিউ ফিন্যান্সে তিনি ১৪ RANK দখল করেছেন। বিকাশের বাবা ভোলানাথ মান্নার নন্দকুমার বাজারে রয়েছে ছোট্ট একটি সেলুন। সেই সেলুন থেকে যা রোজগার হয় তাই দিয়ে চলে সংসার। তাই ছোট থেকেই দারিদ্রতা নিত্য সঙ্গী ছিল বিকাশের। বিকাশের বাবা-মার স্বপ্ন ছিল ছেলেকে প্রতিষ্ঠিত করানোর।
আরোও পড়ুন : আর চলবে না টোটো-অটো-তিন চাকার যান, নিষিদ্ধ এলাকাগুলির তালিকায় আপনার জায়গা নেই তো ?
দুবেলা না খেয়েও জুগিয়েছেন বিকাশের পড়াশোনার খরচ। এই সফলতার পর বিকাশ বলছেন, “আনন্দ তো হচ্ছেই। প্রথম দুবার WBCS পরীক্ষায় অসফলতা পেয়েছিলাম। এরপর অবশেষে স্বপ্ন পূরণ হল। এটা আমার কাছে অত্যন্ত গর্বের অনুভূতি। ইচ্ছা আছে আগামী দিনে ইউপিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার।” ছেলের এই সাফল্যে স্বাভাবিকভাবেই গর্বিত ও খুশি বিকাশের মা।
তিনি জানিয়েছেন, “ছোট থেকে ছেলে খুব বুদ্ধিমান। বরাবর ওর পড়াশোনার প্রতি ঝোঁক ছিল। আগামী দিনে আরো যদি পড়াশুনা করতে চায় আমরা পাশে রয়েছি।” বিকাশের বাবা ভোলানাথ বাবু জানিয়েছেন, “আমার ছেলের পাশে আমি সব সময় থেকেছি। খুব গরিব মানুষ আমরা। যতটা পেরেছি করেছি। বাকিটা ছেলে নিজে টিউশনি পড়িয়ে রোজগার করেছে। ওর ইচ্ছে ছিল ডিএম হবে।”